সরকারি লোন কিভাবে পাওয়া যাবে - ব্যাংক লোন নিতে কি লাগে
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন নিয়ম সম্পর্কে জানুনসরকারি লোন কিভাবে পাওয়া যাবে এই বিষয় সম্পর্কে অনেকেই সর্বজনীন হিসেবে গুলিয়ে ফেলেন। তাই আপনি যদি সরকারি লোন কিভাবে পাওয়া যাবে এবং ব্যাংক লোন নিতে কি লাগে এই বিষয় সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনাকে সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে। কারণ আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা সরকারি লোন কিভাবে পাওয়া যাবে এবং ব্যাংক লোন নিতে কি লাগে এই বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব।
মূলত সরকারি লোন বলতে বাংলাদেশে যারা সরকারি কর্মচারী রয়েছে অর্থাৎ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারে আয়ত্তাধীন, মন্ত্রণালয়, এবং বিভিন্ন অধিদপ্তর এবং কার্যালয় যারা কর্মচারী রয়েছে তারাই এই সরকারি লোন নিতে পারেন। সাধারণত এ ধরনের লোন গ্রহণ করার ক্ষেত্রে কর্মচারীদের সেরকম কোন জামানতের প্রয়োজন হয় না। তবে এমন অনেক সরকারি কর্মচারী রয়েছে যারা এই বিষয়ে সম্পর্কে অবগত নয়। চলুন তাহলে আর কথা না বাড়িয়ে আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে সরকারি লোন কিভাবে পাওয়া যাবে এবং ব্যাংক লোন নিতে কি লাগে এ সকল বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।
সূচিপত্র: সরকারি লোন কিভাবে পাওয়া যাবে - ব্যাংক লোন নিতে কি লাগে
- সরকারি লোন কিভাবে পাওয়া যাবে
- সরকারি লোনের ক্ষেত্রে আবেদনকারীর দিকনির্দেশনা
- ব্যাংক লোন নিতে কি লাগে
- মুদ্রা লোন কিভাবে পাওয়া যায়
- সবচেয়ে কম সুদে লোন দেয় কোন ব্যাংক
- প্রধানমন্ত্রী লোন বাংলাদেশ
- ব্যাংক লোনের মাসিক কিস্তি হিসাব
- শেষ কথা
সরকারি লোন কিভাবে পাওয়া যাবে
সাধারণত সরকারি লোন বলতে শুধুমাত্র গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের আয়ত্তাধীন সকল মন্ত্রণালয় এবং বিভাগ অধিদপ্তর রয়েছে এবং সেখানে স্থায়ী পদে নিয়োগ প্রাপ্ত কর্মচারীদের এর ধরনের সরকারি লোনের সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করতে পারে। সাধারণত সরকারি লোনের মূল সুবিধা গুলো হলো এখানে লোন নেয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ কোনো জামানতের প্রয়োজন হয় না। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে অফিসের কর্মরত কলিগদের জামিনদার হিসেবে রাখতে হয় অর্থাৎ যে ব্যক্তি ডিপার্টমেন্টের নিযুক্ত রয়েছে সে ডিপার্টমেন্টের তার সাথে কলিগকে সরকারি লোনের ক্ষেত্রে জরিমানা রাখতে হয়। চলুন তাহলে এবার মূল বিষয়টি আলোচনা করা যাক যে সরকারি লোন কিভাবে পাওয়া যাবে অর্থাৎ সরকারি লোন পাওয়ার জন্য কোন কোন যোগ্যতা থাকা লাগবে।
- প্রথমত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের আওতায় যে সমস্ত মন্ত্রণালয় এবং অধিদপ্তর রয়েছে সেখানে স্থায়ী পদে আগে থেকে কর্মরত থাকতে হবে।
- লোন নেওয়ার ক্ষেত্রে বয়সসীমা সর্বোচ্চ ৫৬ বছর।
- যে ব্যক্তি লোন নেবে তার মাসিক বেতন অবশ্যই অনলাইন অথবা ইএফটি অনলাইন পদ্ধতির আওতায় আসতে হবে।
- এছাড়াও যে ব্যক্তি লোন গ্রহণ করবে সে যদি পূর্বে আগে থেকে অন্য প্রতিষ্ঠান থেকে আর্থিক লোন গ্রহণ করে থাকে তাহলে সেই লোন পরিষদের রেকর্ড অবশ্যই ভালো হতে হবে।
- সাধারণত রাষ্ট্রায়ত্ত ও স্বায়ত্ত প্রতিষ্ঠান এবং রাষ্ট্রীয় মালিকাধীন কোম্পানিতে নিযুক্ত কর্মচারীরা এ ধরনের লোন পাবেনা। শুধুমাত্র গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের আয়ত্তেই যে সকল সরকারি অধিদপ্তর এবং বিভাগ রয়েছে সে সফল কর্মচারীরাই শুধুমাত্র সরকারি ঋণের আয়ত্তা অন্তর্ভুক্ত হবেন।
- এছাড়াও যে কোন চুক্তিভিত্তিক এবং খন্ডকালীন ও স্থায়ী ভিত্তিতে নিযুক্ত কর্মচারীরা এ সকল সরকারি লোন পাওয়ার ক্ষেত্রে যোগ্য বলে বিবেচিত হবে না অর্থাৎ এরাও সরকারি লোনের অন্তর্ভুক্ত হবে না।
- আবার যদি কোন সরকারি কর্মচারীর বিরুদ্ধে মামলার পাশাপাশি দুর্নীতি মামলার চার্জশিট দাখিল করা হয় তাহলে সে ক্ষেত্রে সেই ব্যক্তি লোনের আওতাভুক্ত হবে না।
- তবে আবার যদি সেই ব্যক্তি মামলা নিষ্পাপ্তি হওয়ার পর সবকিছু যদি ঠিকঠাক থাকে এবং পুনরায় যদি কর্মস্থলে নিয়োগ প্রাপ্ত হয় তাহলে সেই ব্যক্তি ঋণের আওতায় আসতে পারে।
সরকারি লোনের ক্ষেত্রে আবেদনকারীর দিকনির্দেশনা
সরকারি লোনের ক্ষেত্রে আবেদনকারীর দিকনির্দেশনা সম্পর্কে জানা খুবই জরুরী। তাই আমরা আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে সরকারি লোনের ক্ষেত্রে আবেদনকারীর দিকনির্দেশনা সম্পর্কে জানব। মূলত আমরা এখানে জনতা ব্যাংকে উদাহরণ হিসেবে ব্যবহার করব। আবেদনকারীর জন্য কি প্রসেস গুলো ফলো করা প্রয়োজন চলুন তাহলে সেগুলো সম্পর্কে জেনে নেই।
- যে ব্যক্তি লোন নিতে ইচ্ছুক তাকে জনতা ব্যাংক লিমিটেড এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে এবং প্রাথমিকভাবে ট্রাকিং নম্বর নেওয়ার জন্য অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন ফরম সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে।
- যদি সঠিকভাবে ফর্মটি পূরণ করা হয়, তাহলে সেই ব্যক্তিকে একটি অটো জেনারেটড ট্রাকিং নম্বর দেওয়া হবে যা ডাউনলোড করে প্রিন্ট আউট করতে হবে এবং নিজের কাছে রাখতে হবে।
- এবার আবেদনকারীকে জনতা ব্যাংকের ওয়েবসাইট থেকে মূল আবেদন ফরম ঋণের প্রাপ্যতা সংক্রান্ত প্রত্যয়ন, বেতন ভাতা "EFT" এর মাধ্যমে প্রেরণ সংক্রান্ত প্রত্যায়ন ও চেক লিস্ট সংগ্রহ করে নিজের কাছে রেখে দিতে হবে।
- এরপরে প্রাথমিক আবেদন পত্র এবং ট্রাকিং নাম্বার সহ মূল আবেদন পত্র সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট হতে ঋণের প্রাপ্যতা সংক্রান্ত প্রত্যয়ন, বেতন ভাতা "EFT" এর মাধ্যমে প্রেরণ সংক্রান্ত প্রত্যয়ন এবং চেকলিস্টে যে সকল উল্লেখিত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র রয়েছে সেগুলো জনতা ব্যাংকের যে শাখায় আপনি ঋণের জন্য আবেদন করতে ইচ্ছুক সেখানে দাখিল করতে হবে।
- তবে যে ব্যক্তি জনতা ব্যাংকের শাখা হতে ঋণ নিতে ইচ্ছুক সেই ব্যক্তির অবশ্যই সেই শাখায় একটি হিসেবে অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে। এছাড়াও এর পাশাপাশি ওই হিসাব একাউন্টের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্মচারীর বেতন ভাতা এবং পেনশন ও গৃহ নির্মাণ বাবদ লোন বিতরণ ও আদায় সংক্রান্ত সমস্ত কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
ব্যাংক লোন নিতে কি লাগে
আমাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রায় সকলেরই অর্থের প্রয়োজন রয়েছে আর এই অর্থের জন্য আমরা অনেকেই অনেক ধরনের কাজ করে থাকি। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে কোন না কোন সময় অর্থের বিশেষ প্রয়োজন হয় সেই ক্ষেত্রে প্রথমে আমাদের মাথায় ব্যাংক লোনের কথা চলে আসে। আবার যারা সরকারি কর্মচারী রয়েছে তারাও সরকারি লোন কিভাবে পাওয়া যাবে এই প্রশ্নটির পাশাপাশি ব্যাংক লোন নিতে কি লাগে এই বিষয়গুলো নিয়েও তারা ভাবতে থাকে। তবে সে ক্ষেত্রে চিন্তার কোন কারণ নেই আজকের এই আর্টিকেলটি পড়লে আপনি নিশ্চয়ই ব্যাংক লোন নিতে কি লাগে এই বিষয় সম্পর্কে জানতে পারবেন।
বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের এমন অনেক সরকারি এবং বেসরকারি ব্যাংক রয়েছে যে ব্যাংকগুলো খুবই সহজ শর্তে দ্রুত লোন প্রদান করে থাকে। অনেকে রয়েছে যারা দুর্ঘটনাবশত হোক বা অন্য যে কোন কারণেই হোক লোন নেওয়ার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়ে, তখন আর তাদের মাথা সঠিক ভাবে কাজ করে না। তাই আমি বলব যে আজকের এই সম্পূর্ণ পোস্টটি যদি আপনি মনোযোগ সহকারে ভালোভাবে পড়েন তাহলে আশা করি আপনি বিপদের সময় লোন নেওয়ার ক্ষেত্রে কোন সমস্যার সম্মুখীন না হয়ে খুব সহজেই ব্যাংক থেকে লোন নিতে পারবেন।
বাংলাদেশের সরকারি এবং বেসরকারি যতগুলো ব্যাংক প্রতিষ্ঠান রয়েছে তাদের লোন দেওয়ার ক্ষেত্রে অনেকগুলো শর্ত এবং প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট রয়েছে সেগুলো আগে জমা দিতে হয়। আর এই কাগজপত্র গুলো মোটামুটি সব ব্যাংকেই একই ধরনের হয়ে থাকে। তবে বাংলাদেশের প্রত্যেকটি ব্যাংকের লোনের সিস্টেম এবং সে অনুযায়ী সুদের হার এর পাশাপাশি ঋণ পরিশোধের নিয়ম আলাদা হয়। আসুন তাহলে এবার ব্যাংক লোন নিতে কি লাগে সেই বিষয়গুলি সম্পর্কে জেনে নেই। নিচে যে শর্তগুলিগুলি আলোচনা করা হয়েছে মোটামুটি সেই শর্তগুলি বাংলাদেশের সব ব্যাংকের চাহিদা সম্পন্ন শর্তগুলি এবং কাগজপত্রের প্রয়োজন পরে।
- আবেদনকারী ব্যক্তিকে অবশ্যই একজন বাংলাদেশের স্থায়ী নাগরিক হতে হবে।
- যে ব্যক্তি লোন নিতে চাচ্ছে সেই ব্যক্তির বয়স অবশ্যই ১৮ এর বেশি হতে হবে।
- ঋণ নেয়ার সময় আবেদন করার জন্য অবশ্যই জাতীয় পরিচয় পত্র, শিক্ষা সনদ এবং রঙিন পাসফুট সাইজের ছবি সহ আরো অন্যান্য যে সকল প্রয়োজনে কাগজপত্র রয়েছে সেগুলো সাথে নিয়ে যেতে হবে।
- ঋণের জন্য আবেদন করতে যে সকল কাগজপত্র দাখিল হবে সেসব কাগজপত্রগুলি সত্যায়িত হতে হবে।
- যে ব্যক্তি লোন নিতে ইচ্ছুক এবং যে ব্যাংক থেকে লোন নিতে চাচ্ছে সেই ব্যাংকের আওতায় একটি হলেও হিসাব অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে।
- Noc, জমির দলিল, এবং খতিয়ান নামধারী রশিদ এগুলো দাখিল করতে হবে।
- বিশেষ লোনের জন্য আবেদন করতে হলে অবশ্যই গ্রাহকে একজন বেতনভুক্ত কর্মচারী হতে হবে।
- এছাড়াও জামানত হিসেবে বন্ধক দিতে পারবে এরকম সম্পদ থাকা লাগবে।
- ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে সর্বশেষ আপডেট ট্রেড লাইসেন্স এর মূল কপি শো করতে হবে এবং জমা দেওয়ার সময় সেই মূল কপির ফটোকপি দিতে হবে।
- যে ব্যক্তি ব্যাংক থেকে লোন নিচ্ছে সেই ব্যক্তির মাসিক আয়ের হিসাব জমা দিতে হবে।
- যে ব্যক্তি লোন নিতে ইচ্ছুক সেই ব্যক্তি যদি একজন ব্যবসায়ী হয়ে থাকে যেমন সেই ব্যক্তি যদি একটি দোকান চালায় তাহলে সেই ব্যক্তিকে দোকানে পজিশন প্রমাণ করার জন্য দোকানের ফ্রন্ট ছবির প্রয়োজন পড়বে।
- যে ব্যক্তি লোন নিতে ইচ্ছুক সেই ব্যক্তি যদি একজন সরকারি চাকরিজীবী প্রতিষ্ঠানে কর্মরত হয়ে থাকে তাহলে তাকে সেখানকার মাসিক বেতনের প্রমাণপত্র জমা দিতে হবে।
- আবার কৃষকদের লোনের ক্ষেত্রে অবশ্যই কৃষককে একজন বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে।এবং এর সঙ্গে সঙ্গে অবশ্যই সেই কৃষককে ফুলটাইম কৃষক হতে হবে।
- লোনের জন্য আবেদন করার ক্ষেত্রে অবশ্যই জমির দলিল প্রয়োজন পড়বে।
- এবং লোন গ্রহণের পর কি ধরনের পরিকল্পনা রয়েছে অর্থাৎ আপনি লোন নিয়ে কি করতে চাচ্ছেন অথবা ঋণ নিয়ে কোন কাজে লাগাতে চাচ্ছেন এ ধরনের বিষয়ের পরিকল্পনা দাখিল করতে হবে।
- ঋণ গ্রহিতার বর্তমান আয় উৎস কি এবং কি পরিমান মাসিক আয় হয় সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে হবে।
মুদ্রা লোন কিভাবে পাওয়া যায়
অনেকেই ব্যবসার জন্য আবার অনেকেই বিভিন্ন প্রয়োজনীয় কারণে লোন নেওয়ার চিন্তাভাবনা করে থাকে। আর এই লোন নেওয়ার চিন্তাভাবনা মাথায় আসলেই প্রথমে জামানতের কথা মাথায় চলে আসে। কিন্তু মুদ্রার লোন এমন একটি সিস্টেম যেখানে কোনরকম সম্পত্তি বন্ধ রাখার প্রয়োজন হয় না। কেননা এই লোন নিতে জামিনদার হিসেবে সরকার নিজেই থাকবে, এই বিষয়টা অনেকটাই অবাস্তব হলেও বর্তমানে ভারত মহাদেশে এ ধরনের ব্যবস্থা করে দিয়েছে ভারত সরকার। বাংলাদেশে বর্তমান সময়ের মুদ্রা লোনের সেরকম কোন পদ্ধতি এখনো চালু হয়নি। সুতরাং আজকের এই আর্টিকেলে এই অংশতে আমরা যেটা জানবো সেটা হল ভারতে অবস্থান করছেন এমন সব নাগরিকের জন্য মুদ্রা লোন কিভাবে পাওয়া যায় এ সমস্ত আলোচনা করব আজকের এই অংশতে। তাই যারা ভারতে অবস্থান করছেন সেসব নাগরিকদের জন্য আজকের এই অংশটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ হতে যাচ্ছে।
আমাদের বাংলাদেশের মতোই ভারতীয় একটি বিশাল জনগোষ্ঠী অর্থ সংকটে সব সময় ভুগে থাকে। সেই দেশেও অনেক বেকার জনগোষ্ঠী রয়েছে এবং এর পাশাপাশি রয়েছে বিশাল অর্থ সংকট আর এ সকল বিষয় সংকট কাটিয়ে উঠার জন্য ভারত সরকার মুদ্রা লোন, প্রধানমন্ত্রী মুদ্রা লোন, এবং যোজনা লোন এরকম সব লোনের ব্যবস্থা করেছে। এই মুহূর্তে অনেকেরই মনে প্রশ্ন আসতে পারে যে মুদ্রা লোন কিভাবে পাওয়া যায় বা মুদ্রা লোনের আয়তায় ঋণ নিতে কি লাগে। আপনাদের মধ্যে যারা ব্যবসা করার কথা ভাবছেন কিন্তু ব্যবসার জন্য কোন মূলধন নেই আর এর অভাবে ব্যবসায় যোগ দিতে পারছেন না তারা চাইলে মুদ্রা লোনের জন্য আবেদন করতে পারেন। মুদ্রা লোন এর ক্ষেত্রে একজন ব্যক্তি ৫ লক্ষ টাকা থেকে শুরু করে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ গ্রহণ করতে পারবে।
সাধারণত ভারত সরকার মুদ্রা লোনকে তিন ভাগে বিভক্ত করেছে। সেই বিভাগ সেন্টার গুলোর নাম হল। (১" শিশু বিভাগ, শিশু বিভাগে আবেদন করলে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা লোন নেওয়া যাবে। (২" কিশোর বিভাগ, কিশোর বিভাগের জন্য আবেদন করলে ৫০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লোন পাওয়া যাবে। (৩" তরুণ বিভাগ, তরুণ বিভাগের জন্য আবেদন করলে ৫ লক্ষ টাকা থেকে শুরু করে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লোন পাওয়া সম্ভব। তবে প্রত্যেকটি বিভাগের জন্য আলাদা এবং ঋণ পরিষদের জন্য সময় পাওয়া যাবে ৫ বছর পর্যন্ত। তবে এক্ষেত্রে ঋণ আবেদন করার জন্য কোনরকম প্রসেসিং চার্জ এর দরকার পড়বে না। আপনাদের মধ্যে যারা ঋণের আওতায় আসতে পারবে তাদের বিষয়ে কিছু তথ্য নিচে দেওয়া হলো।
- যদি আবেদনকারীর পূর্বের কোন রেকর্ড অর্থাৎ পূর্বে যদি সেই ব্যক্তি অন্য কোন প্রতিষ্ঠান থেকে লোন গ্রহণ করার পর পরিষদের কোন খামতি থাকে তাহলে সেই ক্ষেত্রে সেই ব্যক্তি ঋণের আওতায় আসতে পারবে না।
- আমরা ইতিমধ্যে সরকারি লোন কিভাবে পাওয়া যায় এই বিষয় সম্পর্কে আপনাদের জানিয়েছি।সরকারি লোন কিভাবে পাওয়া যাবে এই প্রশ্নে যেমন আমরা কিছু প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট এর কথা উল্লেখ করেছিলাম ঠিক তেমনি মুদ্রা লোন কিভাবে পাওয়া যায় এই প্রশ্নটিতেও ঠিক একই রকম আবেদন পত্র, ডকুমেন্ট, এবং কাগজপত্র গুলি প্রয়োজন পড়বে। মুদ্রা লোন গ্রহণ করার ক্ষেত্রে কোন ধরনের ডকুমেন্ট প্রয়োজন পড়বে সেগুলো নিচে দেওয়া হল।
- একজন নাগরিক হিসেবে পরিচয় নিশ্চিত করার জন্য ভোটার আইডি কার্ড অর্থাৎ জাতীয় পরিচয় পত্র, ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকলে, প্যান কার্ড, এবং পাসপোর্ট এর ফটোকপি প্রয়োজন হবে।
- লোন নিতে ইচ্ছুক ব্যক্তির স্থায়ী ঠিকানার প্রমাণপত্র দাখিল করার জন্য বিদ্যুৎ বিল, পানির বিল, এছাড়াও ফোন বিল এগুলো প্রদান করতে হবে। আর এই বিলগুলো অবশ্যই দুই মাসের বেশি পুরনো হওয়া যাবে না।
- এছাড়াও SC" ST" OBC" Minority ইত্যাদি এসব প্রমাণপত্র দাখিল করতে হবে।
- ব্যবসায়িক পর্যপত্র এবং ঠিকানা সহ প্রমাণপত্র হিসেবে ট্রেড লাইসেন্স, নিবন্ধনের সার্টিফিকেট সহ আরো অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে হবে।
- এবং আবেদনকারীর সদ্য তোলা ২ কপি রঙিন পাসপোর্ট সাইজের ছবি লাগবে।
সবচেয়ে কম সুদে লোন দেয় কোন ব্যাংক
বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় সকল ব্যাংকগুলো বিভিন্ন খাতে লোন দিয়ে থাকে। এমন অনেকেই রয়েছে যারা ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে বাড়ি তৈরি করা, বিদেশে যাওয়া, ব্যবসা শুরু করা সহ আরো বিভিন্ন কাজ করতে চাচ্ছেন। তারা চাইলে নিচের এই ব্যাংকগুলি থেকে নিঃসন্দেহে লোন নিতে পারেন। কারণ বাংলাদেশের সবচেয়ে কম সুদে লোন দেয় নিচের এই ৩টি ব্যাংক।
- ব্র্যাক ব্যাংক
- এবি ব্যাংক
- বেসিক ব্যাংক
১. ব্র্যাক ব্যাংক: সাধারণত ৯% হারে ২০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত পার্সোনাল লোন দিয়ে থাকে ব্র্যাক ব্যাংক। লোন নিতে হলে আপনাকে অবশ্যই তাদেরকে কিছু তথ্য দিতে হবে। যেমন আপনি লোন নিয়ে কি কাজে লাগাবেন অথবা লোন নিয়ে কি করবেন সেই বিষয়গুলি সম্পর্কে তাদেরকে জানাতে হবে, এসব গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ব্যাংক কর্তৃপক্ষ কাছে জমা দিতে হবে।
মূলত ব্র্যাক ব্যাংক ৯% সুদে গ্রাহকদের লোন দিয়ে থাকে এবং অন্যান্য ব্যাংকের মতোই তারা লোন প্রসেসিং ফি ২% নিয়ে থাকে।
২. এবি ব্যাংক: বর্তমানে বাংলাদেশের বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্যাংক হচ্ছে এবি ব্যাংক। বাংলাদেশের এই ব্যাংক সবচেয়ে কম সুদে লোন প্রদান করে থাকে এবং এবি ব্যাংক লিমিটেড বাংলাদেশ গুলোর সব ব্যাংকের মধ্য এক নম্বরে রয়েছে।
৩. বেসিক ব্যাংক: লোন নেওয়ার ক্ষেত্রে আপনার জন্য বেসিক ব্যাংক পারফেক্ট হতে পারে। কারণ আপনাদের মধ্যে যারা কম সুদে লোন নিতে চাচ্ছেন তারা মাত্র ৮% সুদে বেসিক ব্যাংক থেকে লোন নিতে পারবেন। আমাদের মধ্যে এমন অনেকে রয়েছে যারা নতুন বাড়ি বানাতে চাচ্ছেন আবার কেউ কেউ নতুন করে ব্যবসায়ী যোগ দিতে চাচ্ছেন কিন্তু অর্থের অভাবে কোন কিছুই করতে পারছেন না। তারা চাইলে বেসিক ব্যাংকের যে কোন শাখা থেকে লোনের জন্য আবেদন করতে পারেন।
প্রধানমন্ত্রী লোন বাংলাদেশ
প্রধানমন্ত্রী লোন বাংলাদেশ বলতে মূলত ছোট পরিসদের ব্যবসা এবং নিয়োজিত ঋণ প্রদানের একটি প্রকল্পকে বোঝায়। সাধারণত এ ধরনের ঋণের মূল উদ্দেশ্য হলো বাংলাদেশের সমস্ত বেকার যুবক সমাজকে উৎপাদন মুখী এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নিয়োজিত করা। বাংলাদেশে এমন অনেক বেকার যুবক রয়েছে যারা খুবই ছোট ব্যবসায়ী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য ঋণ নেওয়ার জন্য এখানে ওখানে খোঁজাখুঁজি করে থাকেন। শুধুমাত্র তাদের কথা মাথায় রেখে বাংলাদেশ সরকার প্রধানমন্ত্রী লোন বাংলাদেশ এর আয়তায় অনেক ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। আর এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি প্রকল্পটি হচ্ছে "প্রধানমন্ত্রী ব্যবসার লোন বাংলাদেশ"।
মূলত "প্রধানমন্ত্রীর ব্যবসা লোন বাংলাদেশ" এটি প্রধানমন্ত্রী লোন প্রকল্পের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে ধরা যায় "প্রধানমন্ত্রী লোন বাংলাদেশ" এর মাধ্যমে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান স্থাপন এবং উৎসাহিত করার ক্ষেত্রে এই প্রকল্পটি খুবই সুবিধা জনক। তবে এই প্রধানমন্ত্রী ব্যবসা লোন বাংলাদেশের আয়তায় কিভাবে আসা যায় এই বিষয় সম্পর্কে অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন। মূলত প্রধানমন্ত্রী ব্যবসা লোনের ক্ষেত্রে অবশ্যই কিছু শর্ত এবং যোগ্যতার প্রয়োজন পড়ে। চলুন তাহলে যে সকল যোগ্যতা গুলি প্রধানমন্ত্রী ব্যবসা লোন নিতে গেলে প্রয়োজন পড়ে সেই সকল যোগ্যতাগুলি তুলেধরা হলো।
- প্রথমত ঋণ গ্রহীতাকে অবশ্যই একজন বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে।
- যে কাজের জন্য লোন গ্রহণ করা হচ্ছে সেই কাজ যদি কোন ধরনের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত না হয় তাহলে সেই ক্ষেত্রে ওই ব্যক্তিকে লোন প্রদান করা হবে না।
- অবশ্যই প্রার্থীকে বেকার হতে হবে। যদি কোন কর্মে সেই ব্যক্তি নিয়োজিত থাকে তাহলে তাকে ঋণ গ্রহণযোগ্য বলে মনে করা হবে না।
- যে ব্যক্তি লোন নিতে ইচ্ছুক সেই ব্যক্তির বয়স ১৮ থেকে ৩৪ এর মধ্যে হতে হবে।
- আপনি লোন গ্রহণ করে যে প্রতিষ্ঠানটি তৈরি করতে চাচ্ছেন সেটি পরিচালনা করার মত যোগ্যতা থাকতে হবে।
- আবেদনকারী যদি অন্য কোথাও আগে থেকে লোন নিয়ে থাকে তাহলে সে যদি ঠিকমতো সেই লোন পরিশোধ না করে তাহলে সেই ব্যক্তিকে "প্রধানমন্ত্রী ব্যবসা লোন" দেওয়া হবে না।
- যেই ব্যক্তি লোন নিতে ইচ্ছুক তার আশেপাশের অথবা কোন চেনা পরিচিত আত্মীয়-স্বজন যদি থাকে তাহলে তার মধ্য একজন জামানতদার থাকতে হবে এবং যার জমি জমা রয়েছে ওই ব্যক্তি শুধু জামানতদার থাকতে পারবে। এছাড়াও এর পাশাপাশি জামানতদারের অবশ্যই ঋণ পরিশোধ করার ক্ষমতা থাকা লাগবে।
ব্যাংক লোনের মাসিক কিস্তি হিসাব
প্রিয় পাঠক,, আমরা ইতিমধ্যে সরকারি লোন কিভাবে পাওয়া যাবে এবং ব্যাংক লোন নিতে কি লাগে এই বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানিয়েছি। এবার আমরা ব্যাংক লোনের মাসিক কিস্তি হিসাব এই বিষয়ে সম্পর্কে আলোচনা করব। কারণ কোন ব্যক্তি যদি ব্যাংক থেকে লোন গ্রহণ করে তারপরে সেই ব্যক্তির প্রথমেই যে বিষয়টি মাথায় আসে সেটি হল প্রতিনিয়ত কিস্তি ঋণ পরিশোধ করা। আর এর জন্যই একজন ঋণ গ্রহণকারী ব্যক্তিকে অবশ্যই সঠিকভাবে লোনের ভিত্তি অনুযায়ী নিতে লোন হবে এবং সপ্তাহে হোক বা মাসিক হোক সুষ্ঠুভাবে ব্যাংক ঋণ পরিশোধ করতে হবে।
আরও পড়ুন: নতুন জিমেইল একাউন্ট খোলার নিয়ম
আসুন তাহলে ব্যাংকের লোনের ভিত্তি অনুযায়ী মাসিক কিস্তির হিসাব কেমন হতে পারে সেইটি একটি ছকের মাধ্যমে জেনে নেই। মূলত আমরা নিচের আলোচনায় ৩টি ব্যাংকের সুদের হারের উপর ভিত্তি করে লোনের পরিমাণ এবং লোনের মেয়াদ একই ধরনের রেখে মাসিক কিস্তির পরিমাণ হিসাব করব।
শেষ কথা
প্রিয় পাঠক,,, আমাদের এই আর্টিকেলের মূল আলোচক বিষয় ছিল সরকারি লোন কিভাবে পাওয়া যাবে এবং ব্যাংক লোন নিতে কি লাগে এই বিষয় সম্পর্কে। এছাড়াও আজকের এই পোস্টের মধ্যে আমরা সরকারি লোনের ক্ষেত্রে আবেদনকারীর দিকনির্দেশনা, মুদ্রা লোন কিভাবে পাওয়া যায়, সবচেয়ে কম সুদে লোন দেয় কোন ব্যাংক ,প্রধানমন্ত্রী লোন বাংলাদেশ এবং ব্যাংক লোনের মাসিক কিস্তি হিসাব ইত্যাদি এই বিষয়গুলো সম্পর্কেও আরো বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি। আশা করি আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনি বিস্তারিত বিষয়গুলি সম্পর্কে সম্পূর্ণভাবে ধারণা পেয়েছেন।
শাকিল বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url