কোন মুরগি নিয়ে ব্যবসা বেশি লাভজনক - কি খাওয়ালে মুরগির ওজন বাড়ে

ব্রয়লার মুরগির ওজন বৃদ্ধির চার্ট ও খাবার তালিকা | ব্রয়লার মুরগির ওজন বৃদ্ধির সেরা ৫ টি ওষুধবর্তমানে অনেকেই এখন মুরগির ব্যবসা করে লাভবান হচ্ছেন। অনেকেই এই ব্যবসাটি করে অর্থ উপার্জন করে। মূলত মুরগির ব্যবসা খুবই লাভজনক একটি ব্যবসা। তবে কোন মুরগি নিয়ে ব্যবসা করলে ব্যবসাতে বেশি লাভ হবে, সেই সম্পর্কে আপনারা অনেকেই জানতে চেয়েছেন। আপনি যদি কোন মুরগি নিয়ে ব্যবসা বেশি লাভজনক এবং কি খাওয়ালে মুরগির ওজন বাড়ে এই বিষয়গুলি সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আজকের এই পোস্টটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন। কারণ আজকে আমরা কোন মুরগি নিয়ে ব্যবসা করলে বেশি লাভজনক এবং কি খাওয়ালে মুরগির ওজন বাড়ে ইত্যাদি এই বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করতে যাচ্ছি।

চলুন তাহলে আর বেশি দেরি না করে কোন মুরগি নিয়ে ব্যবসা বেশি লাভজনক এবং কি খাওয়ালে মুরগির ওজন বাড়ে সেই বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যায়। আপনি যদি একজন মুরগি ব্যবসায়ী হয়ে থাকেন তাহলে এই বিষয়গুলো সম্পর্কে জানা খুবই জরুরী। এছাড়া আপনি যদি মুরগির ব্যবসা শুরু করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে এই বিষয়গুলো সম্পর্কে আগে থেকে জেনে রাখতে হবে, তাহলে আপনি মুরগির ব্যবসায় লাভবান হতে পারবেন। সুতরাং আপনি যদি এই বিষয়গুলি সম্পর্কে জানতে চান তাহলে অবশ্যই আজকের এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

সূচিপত্র: কোন মুরগি নিয়ে ব্যবসা বেশি লাভজনক - কি খাওয়ালে মুরগির ওজন বাড়ে

ভূমিকা

বাংলাদেশে এমন অনেক ব্যবসা রয়েছে যার মধ্যে একটি হল মুরগির ব্যবসা। এই মুরগির ব্যবসা করে অনেকেই লাভবান হচ্ছেন। বেশিরভাগ গ্রামের মানুষ এই মুরগির ব্যবসা করে থাকে। মুরগির ব্যবসা করে অনেক ভালো অর্থ উপার্জন করা যায়। অনেক মানুষ রয়েছে যারা মুরগির ব্যবসা শুরু করেছে, তবে মুরগির খামারের সঠিক যত্ন না নেওয়ার কারণে তারা মুরগির খামার করে লাভবান হতে পারছেন না। তাই আপনাদের সুবিধার্থে আজকে আমরা কোন মুরগি নিয়ে ব্যবসা বেশি লাভবান এবং কি খাওয়ালে মুরগির ওজন বাড়ে এই বিষয়গুলি সম্পর্কে আলোচনা করব। এছাড়াও আজকের এই পোস্টটি পড়ে আপনি মুরগির ব্যবসা সংক্রান্ত আরো অনেক তথ্য পাবেন। আর এই বিষয়গুলো পড়ে আপনি উপকৃত হতে পারেন। চলুন তাহলে আর বেশি দেরি না করে আজকের মূল আলোচনা শুরু করা যাক।

কোন মুরগি নিয়ে ব্যবসা বেশি লাভজনক 

আপনারা অনেকেই কোন মুরগি নিয়ে ব্যবসা বেশি লাভজন এই বিষয় সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। তাই আপনাদের সুবিধার্থে আজকে আমরা কোন মুরগি নিয়ে ব্যবসা বেশি লাভজনক সেই বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করব। আমাদের দেশে অনেকেই মুরগির ব্যবসা করে থাকে, এটি খুবই ছোট একটি ব্যবসা। তবে ছোট ব্যবসা হলে হবে কি এই ব্যবসা করে অনেকেই লাভবান হচ্ছে। তবে আপনাকে আগে অবশ্যই জেনে রাখতে হবে, যে কোন মুরগি নিয়ে ব্যবসা করলে বেশি লাভজনক হওয়া যায়। আর এই সম্পর্কে আপনি যদি না জেনে মুরগির ব্যবসা শুরু করেন তাহলে আপনি লাভবান হতে পারবেন না। তাই আপনাকে আগে জানতে হবে যে কোন মুরগি নিয়ে ব্যবসা করলে লাভজনক বেশি হওয়া যায়।

আরও পড়ুন: কবুতরের রোগ ও ঔষধের নাম - কবুতরের রোগ প্রতিরোধের ঔষধ

প্রথমে আমি আপনাকে বলব যে আপনি যদি মুরগির ব্যবসা করার সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে আপনি দেশি মুরগির ব্যবসাটি বেছে নিন। কারণ দেশি মুরগি পালনে খরচ কম এবং লাভ বেশি। বাংলাদেশে অনেকেই দেশী মুরগি ব্যবসা করে লাভবান হচ্ছেন। তবে বিশেষ করে আমাদের দেশে দেশি মুরগির চেয়ে বয়লার মুরগির খামার অনেক বেশি। তবে এই বয়লার মুরগির খামার গুলো বেশি ঝুঁকি থাকে। তাই আপনি যদি ঝুঁকি না নিতে চান এবং বেশি লাভজনক হতে চান তাহলে আপনাকে দেশি মুরগির ব্যবসা করতে হবে। এই ব্যবসাটি করে আপনি অনেক বেশি অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।

কারণ অন্যান্য বিদেশি মুরগির চাইতে দেশি মুরগির দাম অনেক কম। এছাড়াও এদের খাওয়ার খরচ অনেক কম, এদের জায়গাও কম লাগে। সবচেয়ে বড় কথা হল যে দেশি মুরগির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেশি। তাই আপনি বিদেশি জাতের অন্যান্য মুরগি পালন না করে দেশি মুরগি পালন করতে পারেন। এতে আপনি লাভজনক হতে পারবেন। আপনি যদি মনে করেন যে আপনি ছোট একটা মুরগির খামার তৈরি করবেন কিংবা বাণিজ্যিকভাবে মুরগি চাষ করবেন তাহলে আপনি দেশি মুরগি বাছাই করে নিতে পারেন। আর এই দেশি মুরগি চাষ করে আপনি কতটা লাভবান হতে পারবেন সেটা নির্ভর করবে আপনার বাজারের চাহিদার ওপর। তবে বাংলাদেশে দেশি মুরগির দাম অনেকটাই বেশি কারণ এটি খেতে অনেক ভালো।

বাংলাদেশে এমন অনেক বিভিন্ন জাতের মুরগি রয়েছে যেমন, বয়লার, সোনালী, পাকিস্তানি মুরগি, লেয়ার, ইত্যাদি এরকম আরো অনেক বিভিন্ন জাতের মুরগি রয়েছে। যার তুলনায় দেশি মুরগির খামার খুব কম প্রয়োজন হয়। তাই আপনি দেশি মুরগি নিয়ে ব্যবসা শুরু করতে পারেন। কারণ বাজারে যার চাহিদা বেশি এবং যেগুলো বৃহৎ পরিসরে চাষ করা হয়। সেই মুরগিগুলো বাজারজাত করলে বেশি লাভজনক খাওয়া যায়। তাই যেহেতু অন্যান্য বিদেশী মুরগীর তুলনায় দেশি মুরগির খামার খুব কম, তাই আপনি চাইলে দেশি মুরগির চাহিদা পূরণ করতে এই ব্যবসাটা শুরু করতে পারেন। আপনি যদি দেশি মুরগির খামার ভালোভাবে পরিচর্যা এবং মুরগিকে ভালো খাবার খাওয়ান তাহলে মুরগিগুলো দ্রুত বড় হবে। এবং আপনি বাজারজাত করে অনেক বেশি অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।

কি খাওয়ালে মুরগির ওজন বাড়ে

আপনি যদি মুরগির ব্যবসা করতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই আগে থেকেই জেনে রাখতে হবে যে কি খাওয়ালে মুরগির ওজন বাড়বে। আর আপনি যদি এটি না জেনে মুরগির খামার দেন তাহলে আপনি লাভবান হতে পারবেন না। তাই আপনাকে অবশ্যই জেনে রাখতে হবে যে কি খাওয়ালে মুরগির ওজন বাড়ে।

আপনি যদি খুবই কম সময়ের মধ্যে মুরগির ওজন বৃদ্ধি করতে চান তাহলে আপনার খামারের মুরগিকে এমন কিছু খাবার দিতে হবে যেগুলো পুষ্টিকর। যেমন: ভাত, চাল, গমের ভুসি, ধান ইত্যাদি এগুলো আপনার মুরগিকে বেশি বেশি করে খাওয়াতে পারেন। তবে এই খাবারগুলি খেলে মুরগি সুস্থ থাকবে, কিন্তু এই খাবারগুলি আপনার মুরগির ওজন বৃদ্ধি কম করবে। যেহেতু আপনি খুব কম সময়ে মুরগির ওজন বাড়াতে চান। 

তাই এই খাওয়ার গুলির পরিবর্তে আপনি বাজারে যে সোনালি মুরগির খাবার পাওয়া যায়। সেই খাবারগুলি আপনার খাবারের দেশি মুরগি অথবা বিদেশি জাতের মুরগিকে খাওয়াতে পারেন। তাই আপনি ভাত, গমের ভুষি, ধান, চাউল ইত্যাদি এই খাবারগুলির পাশাপাশি আপনি আপনার খামারের মুরগিকে সোনালী মুরগীর ফিড খাওয়াবেন। এতে করে মুরগির ওজন দ্রুত বাড়বে।

তাই আপনি যদি আপনার খামারের মুরগির দ্রুত ওজন বাড়াতে চান তাহলে আপনি দেখবেন যে বাজারের বিভিন্ন ধরনের মুরগির ফিড পাওয়া যায় এই ফিড গুলো খাওয়াতে পারেন। তাই আপনার যদি দেশি মুরগি অথবা বয়লার কিংবা সোনালী মুরগি থেকে থাকে তাহলে আপনি সেই অনুযায়ী ফিড খাওয়ালে মুরগির ওজন দ্রুত বাড়বে। এছাড়াও আপনি মুরগিকে ফিড খাওয়ানোর পাশাপাশি ধান, গম, ভাত, চাউল, ইত্যাদি খাদ্য খাওয়াতে পারেন। বাজার থেকে কিনে আনা বিভিন্ন ধরনের ফিডের পাশাপাশি আপনি যদি এই খাবারগুলি আপনার খামারের মুরগিকে খাওয়ান তাহলে মুরগি সুস্থ  থাকবে।

মুরগির খামার দেওয়ার আগে যে বিষয়গুলি দেখতে হবে

বাংলাদেশে এমন অনেক নতুন মুরগির ব্যবসায়ী আছে যারা নতুন মুরগির খামার দিয়েছে, কিন্তু তারা মুরগি পালন করে কিছুতে লাভবান হতে পারছেন না। আপনি যদি একজন মুরগির ব্যবসায়ী হতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে মুরগির খামার দেওয়ার আগে কিছু বিষয় সম্পর্কে জেনে রাখতে হবে। তাহলে আপনি মুরগির ব্যবসায় লাভবান হতে পারবেন। আর যদি আপনি মুরগির খামার দেওয়ার আগে যে বিষয়গুলি সম্পর্কে জানার প্রয়োজন সেগুলো না জেনেই মুরগির ব্যবসা শুরু করেন তাহলে আপনি অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তাই আপনাকে অবশ্যই মুরগির খামার দেওয়ার আগে কিছু বিষয় রয়েছে সেগুলো সম্পর্কে জেনে নিতে হবে। চলুন তাহলে মুরগির খামার দেওয়ার আগে যে বিষয়গুলি জেনে নেয়ার প্রয়োজন সেগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জেনে নেওয়া যাক। 

খাবার: আপনি যদি মুরগি পালন করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে প্রথমে খাবারের দিকে নজর দিতে হবে। কারণ আপনি যদি সঠিক খাবার মুরগিকে না দেন তাহলে আপনার মুরগির ওজন এবং মুরগি বড় হবে না। তাই আপনাকে মুরগি পালন করতে হলে মুরগিকে অবশ্যই সঠিক পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে হবে। যদি আপনার মুরগি সঠিক পুষ্টি পায় এবং সুস্থ থাকে তাহলে বাজারজাত করতে সাহায্য করবে। তাই আপনি আপনার খামারের মুরগির জন্য ভালো কোম্পানির খাবার কিনবেন।

পর্দা: মুরগি পালন করতে হলে আপনাকে মুরগির খামারের চারপাশে পর্দা দিতে হবে। তবে আপনি সব সময় মুরগির খামারে চারপাশে পর্দা দিয়ে রাখবেন না। এমন অনেকে আছে যারা অধিক শীতের কারণে মুরগির খামারে চারপাশের পর্দা দিয়ে ঢেকে দেয়, যার কারণে খামারের ভেতর ঠিকমতো অক্সিজেন সরবরাহ হয় না, আর এর কারণে অনেক মুরগি মারা যায়। তাই আপনি মুরগির খামারের চারপাশে পর্দা দেয়ার সময় এক হাত বাদ দিয়ে পর্দা দিবেন, যেন মুরগির খামারে আলো বাতাস পর্যাপ্ত পরিমাণে যায়। এবং পর্যাপ্ত পরিমাণ অক্সিজেন সরবরাহ করতে পারে।

আরও পড়ুন: সাপে কামড়ালে কি করবেন, কি করবেন না - সাপে কামড়ালে প্রাথমিক চিকিৎসা 

বাচ্চা: আপনাকে মুরগি পালন করতে হলে অবশ্যই সুস্থ সবল মুরগির বাচ্চা খামারে তুলতে হবে। তা না হলে আপনি কখনোই লাভবান হতে পারবেন না। কারণ মুরগির বাচ্চাদের অনেক সময় অনেক রোগ হয়ে থাকে যার ফলে অনেক মুরগি মারা যায়। তাই সঠিক সময় সঠিক স্থানে রোগ আক্রান্ত মুরগির বাচ্চা আলাদা করে রাখবেন। আর যদি আপনি আক্রান্ত বাচ্চা এবং সুস্থ বাচ্চা একসাথে রাখেন তাহলে আপনার সব মুরগি একে একে আক্রান্ত হয়ে মারা যেতে পারে। তাই আপনি মুরগি ক্রয় করার আগে অবশ্যই সঠিক এবং সুস্থ সবল মুরগির বাচ্চা দেখে ক্রয় করবেন।

লিটার: আপনি যদি মুরগির ব্যবসা করতে চান তাহলে আপনাকে আগে লিটার সম্পর্কে জেনে রাখতে হবে। কারণ কখন লিটার নষ্ট হবে এবং কখন নাড়া দিতে হবে। এছাড়াও কখন লিটার পাল্টাতে হবে এই বিষয় সম্পর্কে আপনাকে আগে থেকেই জেনে রাখতে হবে। নয়তো আপনি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন।

ওপরে যে চারটি বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে এগুলো সম্পর্কে আগে থেকে না জেনে আপনি কখনোই মুরগির ব্যবসা অথবা মুরগি পালন করার পদক্ষেপ নেবেন না। আর আপনি যদি ওপরের বিষয়গুলি না জেনে মুরগির খামার দেওয়ার পদক্ষেপ নেন তাহলে আপনি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন।

অল্প পুঁজি নিয়ে মুরগির খামার

এমন অনেকেই রয়েছে যারা মুরগির খামার দিতে চায়, কিন্তু তারা টাকার অভাবে মুরগির খামার দিতে পারে না অথবা তারা কম টাকা নিয়ে মুরগির খামার দিতে ভয় পায়। বাংলাদেশে এমন অনেক যুবক রয়েছে যারা মেধাবী হওয়া শর্তেও এখনো বেকার রয়েছে। আপনারা যারা বেকার রয়েছেন তারা চাইলে খুবই অল্প পুজিতে মুরগির খামার চালু করতে পারেন। এতে করে আপনি ভালো অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।

আপনাদের মধ্যে যাদের খুবই কম পুঁজি রয়েছে তারা চাইলে ৫০০ টি মুরগি নিয়ে আপনার খামার চালু করতে পারেন। এছাড়াও যাদের একটু বেশি পুঁজি রয়েছে তারা চাইলে ১০০০ মুরগি নিয়ে খামার চালু করতে পারে। এতে করে আপনি ভালো অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। মুরগির খামারের ঘরের উচ্চতা হবে ৪ ফুট, প্রস্থ হবে সাড়ে ৪ ফুট, দৈর্ঘ্য হবে ৬ ফুট, মোটামুটি এগুলো করলে ভালো হয়। এছাড়াও আপনাকে মুরগির ডিম পাড়ার খাচ্ছি কিনতে হবে, মুরগির খাবার খাওয়ার পাত্র কিনতে হয়। আর এভাবে আপনি ৫০০ থেকে ১০০০ মুরগি পালন করতে পারবেন তাও আবার খুবই অল্প পুজিতে।

দেশি মুরগির খামারে লাভ হওয়ার কারণ

বাংলাদেশে এমন অনেক মুরগি রয়েছে যেগুলো অনেক খামারিরায় পালন করে থাকে। তবে অন্যান্য সব মুরগির থেকে তুলনামূলকভাবে দেশি মুরগি অনেক দ্রুত বড় হয়। এছাড়াও দেশি মুরগির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অন্যান্য সব মুরগির থেকে অনেক বেশি হয়ে থাকে। তাই এই দেশি মুরগি পালন করে অনেকেই লাভবান হয়ে থাকেন। এছাড়াও অন্য জাতের মুরগিও পালন করা যেতে পারে, তবে সেই মুরগি গুলোর যদি একবার কোন রোগ হয় তাহলে সেই মুরগির মৃত্যুর ঝুঁকি অনেক বেশি থাকে। তাই বেশিরভাগ খামারি অন্যান্য জাতের মুরগি বেশি পালন করে না, তারা বেশিরভাগ দেশি মুরগি পালন করে। কারণ দেশি মুরগি পালনে খরচ কম এবং লাভ বেশি।

দেশি মুরগি খুব কম খরচে পালন করা যায়, আবার এর লাভও অনেক বেশি থাকে। বিদেশি মুরগির তুলনায় দেশি মুরগির বাচ্চা অনেক কম দামে পাওয়া যায় এর ফলে অনেক খামারি দেশি মুরগি কিনে থাকে। যদিও বিদেশি মুরগি গুলো খুব দ্রুত উৎপাদন করা যায়, কিন্তু দেশি মুরগির তুলনায় বিদেশি মুরগির ক্ষেত্রে খরচ অনেক বেশি হয়ে যায়। আর সেই কারণে বিদেশি মুরগি পালন খামারীরা ব্যবসায় তেমন একটা বেশি লাভ করতে পারে না। 

বাংলাদেশে যেহেতু মুরগির খামারের সংখ্যা অনেক বেশি, তাই সব সময় মুরগির দাম অনেক কম বেশি হয়ে থাকে। আর সেই কারণে লাভের তুলনায় লোকসান অনেক বেশি হয়। তাই আপনি বিদেশি মুরগির পরিবর্তে দেশি মুরগি পালন করতে পারেন। দেশি মুরগি পালনে খরচ অনেক কম আবার দেশি মুরগি পালন করলে অনেক বেশি লাভবানও হওয়া যায়। তাই আপনি দেশি মুরগি পালন করার চেষ্টা করবেন।

দেশি মুরগি পালন প্রশিক্ষণ

আপনি যদি দেশি মুরগি পালন করার কথা ভেবে থাকেন তাহলে আপনাকে আগে দেশি মুরগির খামার সম্পর্কে প্রশিক্ষণ নিতে হবে। তাই আপনাকে দেশি মুরগি পালন করার আগে অবশ্যই দেশি মুরগি পালন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের গিয়ে আপনাকে প্রশিক্ষণ নিতে হবে। তারপর আপনি যদি একটি ফার্ম করতে পারেন তাহলে আপনি দেশি মুরগি পালন করে অনেক লাভবান হতে পারবেন। বাংলাদেশে মুরগি পালনের এমন দুটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র আছে আর আপনি চাইলে সেই প্রতিষ্ঠান কেন্দ্র থেকে প্রশিক্ষণ নিতে পারেন। 

বাংলাদেশে আপনি যেখান থেকে প্রশিক্ষণ নিবেন সেই প্রতিষ্ঠানের নাম হলো: উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস। এটি ছাড়াও আরো একটি মুরগি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র আছে সেটি হল: বাংলাদেশ যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠান প্রশিক্ষণ কেন্দ্র আপনি যদি এই দুইটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে একটি খামার তৈরি করেন তাহলে আপনি তাদের অনেক সহযোগিতা পাবেন এবং সেটা আপনার খামারের জন্য অনেক ভালো একটি পরিকল্পনা। সেই সাথে সাথে আপনি আপনার মুরগির খামার থেকে মুরগি বাজারজাত করে অনেক অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। প্রশিক্ষণ নেওয়ার ফলে আপনি দেশি মুরগির খামার সঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারবেন এবং অনেক বেশি লাভবান হতে পারবেন।

দেশি মুরগির ঔষুধের তালিকা

দেশি মুরগি সহজে অসুস্থ হয় না, আর যদি অসুস্থ হয়, তাহলে আপনাকে কিছু নিয়ম অনুযায়ী পর্যবেক্ষণ করতে হবে। বেশিরভাগ দেশি মুরগি বাচ্চা বয়সে রোগে আক্রান্ত হয়, এবং অপুষ্টি জনিত কারণে দেশি মুরগির বাচ্চা সঠিকভাবে বেড়ে ওঠে না। আর এর ফলে ডিম ও মাংস উৎপাদন সঠিক মাত্রায় আসে না। তাই দেশি মুরগি বাচ্চা বয়স থাকতেই আপনাকে যত্ন নিতে হবে এবং নিয়মিত ওষুধ দিতে হবে। তাহলে বাচ্চা বয়সে সঠিকভাবে যত্ন পাওয়ার কারণে মুরগির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো থাকবে। চলুন তাহলে দেশি মুরগির ওষুধের তালিকা জেনে নেয়া যাক।

বয়স দিন:                        ঔষুধের নাম:

  • ১দিন= Lysovit Glucose 
  • ২ থেকে ৪ দিন টানা= Amoxacillin
  • ৩থেকে ৫দিনের ভেতর= Ib plus Nd Live Vaccine ( Ranikhet and Bronchitis) 
  • ১০ থেকে ১২ দিনের ভিতর= Gumboro Live Vaccine
  • ১২ থেকে ১৪ দিন= Livertonics and Vitamins
  • ১৮ থেকে ২২ দিন= Gumboro Live Vaccine
  • ২৪ থেকে ২৬ দিনের ভেতর= Nd Live Vaccine ( Ranikhet )
  • এবং ২৪ থেকে ২৬ দিন= Emperium plus Simpro
  • ৩০ তম দিনে= Foulpox Vaccine
  • ৩৫ তম দিনে= কৃমি নাশক ওষুধ
  • ৪৫ থেকে ৪৮ দিনের ভেতর= Ranikhet Live Vaccine (যদি প্রাদুর্ভাব বেশি থাকে)
  • ৫০ তম দিন থেকে নিয়মিত= Probiotics plus Vitamins plus Livertonics 
তবে উপরোক্ত যে কোনো এন্টিবায়োটিক ব্যবহারের পূর্বে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। দেশি মুরগিকে টিকা প্রদান করা অত্যন্ত জরুরি।

শেষ কথা

প্রিয় বন্ধুরা, আজকের এই আর্টিকেলে আমরা কোন মুরগি নিয়ে ব্যবসা বেশি লাভজনক এবং কি খাওয়ালে মুরগির ওজন বাড়ে এই বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা করেছেন। আশা করি আপনি এই বিষয়গুলি সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। এছাড়াও আজকের এই পোষ্টের মাধ্যমে আমরা মুরগির খামার দেওয়ার আগে যে বিষয়গুলি দেখতে হবে, অল্প পুঁজি নিয়ে মুরগির খামার, দেশি মুরগির খামারে লাভ হওয়ার কারণ, দেশি মুরগি পালন প্রশিক্ষণ, দেশি মুরগির ওষুধের তালিকা, ইত্যাদি এই বিষয়গুলো সম্পর্কে আরো বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে। আপনি নিশ্চয়ই এই বিষয়গুলি সম্পর্কে অবগত হয়েছেন।

আরও পড়ুন: কোয়েল পাখির ডিমের ১৪ টি উপকারিতা ও ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে জানুন

কোন মুরগি নিয়ে ব্যবসা বেশি লাভজনক - কি খাওয়ালে মুরগির ওজন বাড়ে?,, আজকের এই পোষ্ট সম্পর্কে আপনার যদি কোন মতামত থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন। এরকম আরো তথ্যমূলক আপডেট পেতে এই ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ফলো করুন। তাহলে আজকে আর কথা না বাড়িয়ে আমার সংক্ষিপ্ত আলোচনা এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আবার কথা হবে অন্য কোন টপিক নিয়ে। ততক্ষণ পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন। এতক্ষণ পর্যন্ত সময় দিয়ে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

শাকিল বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url