কিসমিসের ৩০ টি উপকারিতা ও অপকারিতা - কিসমিস খাওয়ার নিয়ম

ক্যান্সার কেন হয়- ক্যান্সার থেকে মুক্তির উপায়আমরা অনেকেই জানি না যে কিসমিস কি থেকে তৈরি হয়? কিসমিস হল শুকনো আঙ্গুর। কিসমিস কে ইংরেজিতে রেইসিনও বলা হয়ে থাকে। সাধারণত কিসমিস বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে উৎপাদিৎ হয়ে থাকে। কিসমিস চাইলে সরাসরি ও রান্নার মাধ্যমে খাওয়া যেতে পারে। তবে কিসমিসের উপকারিতা ও অপকারিতা রয়েছে। কিসমিস খেলে বিশেষ করে কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ এবং এসিডিটি দূর হয়। আজকে আমরা এই আর্টিকেলে কিসমিসের উপকারিতা ও অপকারিতা এবং কিসমিস খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।

চলুন আর বেশি দেরি না করে কিসমিসের উপকারিতা ও অপকারিতা এবং কিসমিস খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক। আপনারা যারা এই বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জানতে চান। তারা অবশ্যই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়বেন।

সূচিপত্র: কিসমিসের উপকারিতা ও অপকারিতা - কিসমিস খাওয়ার নিয়ম

ভূমিকা

কিসমিসের উপকারিতা ও অপকারিতা বলে শেষ করা যাবে না। কিসমিস আমাদের শরীরের আয়রনের ঘাটতি পূরণ করে। এছাড়াও রক্তের লাল কণিকার পরিমাণও বাড়ায়। তবে কিসমিস শুকনো খাবার থেকে ভিজিয়ে খেলে অনেক বেশি উপকার পাওয়া যায়। প্রতিদিন কিসমিসের পানি পান করলে কোষ্ঠকাঠিন্য এবং এসিডিটি দূর হয়। প্রতিদিন যদি কিসমিস ভেজানো পানি পান করা যায়, তাহলে ঔষধ খাওয়ার প্রয়োজন হয় না। এছাড়াও ভিজিয়ে রাখা কিসমিসের পানি রক্ত পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। তবে কিসমিস খাওয়ার নিয়ম ও রয়েছে। চলুন তাহলে বেশি দেরি না করে মূল আলোচনা গুলো শুরু করা যাক।

কিসমিসের উপকারিতা

  • কিসমিসে রয়েছে ভিটামিন, খনিজ, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও পলিফেলন, যা আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
  • কিসমিসে রয়েছে লোহার মতো প্রয়োজনীয় পুষ্টি, যা আমাদেরকে অনিদ্রা কাটিয়ে দিতে পারে শান্তির ঘুম।
  • অনেকে রয়েছেন যারা শরীরের ওজন কমাতে চান না। বরং ওজন বাড়াতে চান। তাই আপনারা যারা শরীরের স্বাস্থ্য ভালো করতে চান এবং শরীরের ওজন বাড়াতে চান। তারা নিশ্চিন্তে কিসমিস খেতে পারেন। কারণ কিসমিসে রয়েছে  ফ্রুক্টোজ ও গ্লুকোজ যা আমাদের শরীরে শক্তি যোগাতে সাহায্য করে।
  • কিসমিসে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম রয়েছে, যা শরীরের রক্ত নালিকে শীতল করে। এবং উচ্চ রক্তচাপ থেকে মুক্তি দেয়।
  • এছাড়াও কিসমিস ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে।

কিসমিসের অপকারিতা

  • যাদের এলার্জি রয়েছে তারা কিসমিস খাবেন না। কারণ কিসমিস এলার্জির সমস্যা আরও বেশি বাড়াতে পারে।
  • কিসমিস হজমে বিঘ্ন ঘটায়। তাই অতিরিক্ত কিসমিস খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
  • যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে এবং ডায়াবেটিসজনিত সমস্যা রয়েছে। তারা অতিরিক্ত কিসমিস খাবেন না, এতে করে ডায়াবেটিস বেড়ে যেতে পারে।
  • এছাড়াও আপনারা যারা শরীরের ওজন কমাতে চান। তারা অতিরিক্ত কিসমিস খাবে না, কারণ অতিরিক্ত কিসমিস খেলে শরীরের ওজন বেড়ে যেতে পারে।

কিসমিস খাওয়ার নিয়ম

আপনি চাইলে কিসমিস বিভিন্ন উপায়ে অথবা বিভিন্নভাবে খেতে পারেন। নিচে কিসমিস খাওয়ার কিছু ধারণা দেওয়া হল।

  • আপনি চাইলে রাতে কিসমিস ভিজিয়ে রেখে সকালে খালি পেটে কিসমিস সহ কিসমিসের পানি খেতে পারেন। এতে করে আপনার শরীর চাঙ্গা হবে এবং অনেক পুষ্টিগুণ পাবেন।
  • সাধারণত কিসমিস আঙুর ফল শুকিয়ে তৈরি করা হয়ে থাকে। এই কিসমিস সেমাই, পায়েস, কোরমা সহ আরো বিভিন্ন খাওয়ারের সাথে রান্না করে খেতে পারেন।
  • ছাড়াও আপনি চাইলে কিসমিস কাঁচা অবস্থাতেও খেতে পারেন। কিসমিসের গুনাগুন অনেক। তবে কাঁচা অবস্থাতে কিসমিস খেতে চাইলে আপনি অবশ্যই কিসমিস গুলো ধুয়ে পরিষ্কার করে খাবেন।

কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার নিয়ম

আপনারা অনেকেই রয়েছেন যারা কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার নিয়ম জানতে চান। অনেকেই ভাবেন কিসমিস কি খাওয়া যায়, কিসমিস অবশ্যই খাওয়া যায়। কিসমিস যে কোন মিষ্টি জাতীয় খাবারে দেখা যায়। আবার শুকনো কিসমিসও খাওয়া যায়। এছাড়াও আপনি চাইলে কিসমিস পানিতে ভিজিয়েও খেতে পারেন। চলুন তাহলে কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানা যাক।

    আপনি প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে ২০ থেকে ৩০ টি কিসমিস নিবেন। তার সাথে ছোট একটা কাপ বা বাটি নিবেন। এরপর কিসমিস গুলো পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলবেন। এবার কিসমিস গুলো সেই ছোট বাটিতে ভিজিয়ে রাখবেন। এবার আপনি পরের দিন সকালে দেখবেন কিসমিস গুলো বড় হয়ে গেছে। আপনি আগে কিসমিস ভেজানো সেই পানি পান করবেন। তারপর কিসমিস গুলো খাবেন। এভাবে কিসমিস খেলে ভালো উপকার পাওয়া যায়।

    সেক্সে কিসমিসের উপকারিতা

    • নিয়মিত কিসমিস খেলে যৌন দুর্বলতা দূর হয়ে যায়। এবং যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
    • কিসমিসে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি রয়েছে, যা দেহের পুষ্টি সমৃদ্ধ করতে সাহায্য করে।
    • কিসমিস খেলে মন ও শরীর ভালো থাকে, এবং যৌন মিলন তৃপ্তিময় ও দীর্ঘক্ষণ হয়।
    • এছাড়াও প্রতিদিন যদি বিকালে ৫-৭ টি কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়া যায়। তাহলে চিরদিনের জন্য যৌন সমস্যার বিলুপ্তি ঘটবে।
    • প্রাকৃতিকভাবে সেক্সের সমস্যা সমাধান করতে, কিসমিস খেতে পারেন। এটি আপনার সেক্স পাওয়ার বাড়াতে সাহায্য করবে।
    • সাধারণত কিসমিস মন ভালো রাখে। তাই সেক্সে মন ভালো রাখার জন্য কিসমিস খাওয়া উচিত।
    • এছাড়াও নিয়মিত কিসমিস খেলে শরীরের রক্ত চলাচল ঠিক থাকে, এবং যৌন সমস্যা থাকলে তা দূর করবে।

    সকালে কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা

    • সকালে কিসমিস খেলে শরীরে আয়রনের ঘাটতি পূরণ হয়। এবং রক্তের লাল কণিকার পরিমাণ বাড়ায়।
    • সকালে কিসমিস খেলে হৃদক্রিয়া ভালো হয়।
    • সকালে কিসমিস খেলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়।
    • ভিজিয়ে রাখা কিসমিসের পানি পান করলে লিভার পরিষ্কার থাকে।
    • সাধারণত কিসমিসে ক্যালসিয়াম থাকে, যা দাঁত ও হাড় গঠনে সাহায্য করে থাকে।
    • কিসমিসের ভেজানো পানি পান করলে রক্ত পরিষ্কার হয়।
    • কিসমিসে প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা নানারকম রোগ থেকে মুক্তি দেয়।
    • এছাড়াও প্রতিদিন কিসমিস খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য সহ এসিডিটি দূর হয়।

    শুকনো কিসমিস খেলে কি হয়

    • শুকনো কিসমিস ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। 
    • কিসমিসে প্রচুর পরিমাণে ফ্রুক্টোজ ও গ্লুকোজ থাকে যা দেহের ওজন বাড়াতে সাহায্য করে।
    • কিসমিসে রয়েছে পলিফেনলস, অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টি-ইনফেমেটারি যা শরীরের ক্ষত এবং ইনফেকশন হওয়ার ঝুঁকি কমায়।
    • কিসমিসে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে, যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং আমাদের শরীরের পরি প্রক্রিয়া দ্রুত হতে সাহায্য করে।
    • শুকনো কিসমিস শরীরের দ্রুত শক্তি যোগাতে সাহায্য করে। কারণ কিসমিসে রয়েছে ফ্রুক্টোজ, গ্লুকোজ, চিনি ইত্যাদি যা তাৎক্ষণিকভাবে দেহে এনার্জি সরবরাহ করে।
    • শুকনো কিসমিসে রয়েছে পটাশিয়াম যা শরীরের উচ্চমাত্রার সোডিয়ামকে নিয়ন্ত্রণ রাখে। এর ফলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে।
    • এছাড়াও শুকনো কিসমিসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম যা আমাদের দেহের হাড় মজবুত করতে এবং আহারের ক্ষয় ও বাতের ব্যথা দূর করতে সাহায্য করে থাকে।

    প্রতিদিন কতটুকু কিসমিস খাওয়া উচিত

    কিসমিসে প্রচুর পরিমাণে আয়রন ও ক্যালরি থাকে। তাই পরিমাণের তুলনায় বেশি কিসমিস খেলে নানা রকম সমস্যা হতে পারে। তাই নিয়মিত ভাবে কিসমিস খাওয়া ভালো। প্রতিদিন কতটুকু কিসমিস খাওয়া উচিত তা নিয়ে বিশেষজ্ঞগণ একটি ধারণা দিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে একজন মানুষের প্রতিদিন ৪০-৫০ গ্রাম কিসমিস খাওয়া উচিত।

    শেষ কথা

    পরিশেষে আমরা বলতে পারি, আমাদের দৈনন্দিন জীবনে কিসমিসের উপকারিতা ও অপকারিতা অনেক। আজকে আমরা আমাদের এই কিসমিসের উপকারিতা ও অপকারিতা আর্টিকেলে কিসমিস খাওয়ার নিয়ম, কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার নিয়ম, সেক্সে কিসমিসের উপকারিতা, সকালে কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা, শুকনো কিসমিস খেলে কি হয়, প্রতিদিন কতটুকু কিসমিস খাওয়া উচিত ইত্যাদি সম্পর্কে আলোচনা করেছি।

    আশা করি আমাদের এই কিসমিসের উপকারিতা ও অপকারিতা এবং কিসমিস খাওয়ার নিয়ম পোস্টটি আপনাদের ভালো লাগবে এবং আপনারা উপকৃত হবেন। এই ধরনের আরও আর্টিকেল পড়তে আমাদের সাথে থাকুন। এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ

    এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

    পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
    এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
    মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

    শাকিল বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

    comment url