ডায়াবেটিস থেকে মুক্তির ৫ উপায় এবং ডায়াবেটিস এর লক্ষণ সম্পর্কে জেনে নিন
ডায়াবেটিস বর্তমানে একটি মহামারীর নাম। শরীর পর্যাপ্ত পরিমাণ ইনসুলিন তৈরি করতে না পারলে রক্তের সুগারের মাথা বেড়ে যায়। আর এই কারণেই ডায়াবেটিস ঘটে। নিয়মিত ওষুধ সেবন এবং সঠিক খাদ্যাভাস ব্যায়াম ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আজকে আমরা আপনাদেরকে ডায়াবেটিস থেকে মুক্তির ৫ টি উপায় নিয়ে আলোচনা করব।
আপনারা অনেকেই ডায়াবেটিস রোগে ভুগছেন। আপনারা যারা ডায়াবেটিস রোগে ভুগছেন তারা আমার এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ুন। কারণ আজকে এই ব্লগ পোষ্টের মাধ্যমে আমি আপনাদেরকে ডায়াবেটিস থেকে মুক্তির ৫ টি উপায় জানাবো। আপনারা যারা ডায়াবেটিস থেকে মুক্তির পাঁচটি উপায় সম্পর্কে জানতে চান তারা এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
সূচিপত্র: ডায়াবেটিস থেকে মুক্তির ৫ টি উপায় - ডায়াবেটিস এর লক্ষণ
- ভূমিকা
- ডায়াবেটিস থেকে মুক্তির ৫ টি উপায়
- ডায়াবেটিস এর লক্ষণ
- ডাইবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকায় যা যা থাকতে হবে
- কি খেলে ডায়াবেটিস হবে না
- ডায়াবেটিস কমানোর ঘরোয়া উপায়
- কি কি খাবার খেলে ডায়াবেটিস বাড়ে
- ডায়াবেটিসে কোন কোন ফল খাওয়া উচিত
- শেষ কথা
ভূমিকা
আমাদের নিত্য ব্যবহার্য শব্দগুলোর মধ্যে এখন প্রায় ডায়াবেটিস শব্দটি বেশ কমন হয়ে পড়েছে। কারণ ডায়াবেটিস যেন এখন মহামারী আকারে দেখা দিয়েছে। প্রায় দেখা যায় যে আমাদের আশেপাশে বা আমাদের আশেপাশেরই কারো না কারো ডায়াবেটিস রয়েছে। আর এই ডায়াবেটিস শুধু বয়স্কদের হয় না বরঞ্চ তরুণরাও আজকাল এই ডায়াবেটিসের শিকার হচ্ছে। আর এর কারণে হৃদরোগের ঝুঁকিও বাড়ছে।
ডায়াবেটিস থেকে মুক্তির ৫ টি উপায়
বিশেষজ্ঞদের মতে নিচে দেওয়া এই ৫ টি উপায়ে ডায়াবেটিস রোগী খুব সহজেই সুস্থ হয়ে উঠবে। চলুন তাহলে সেই ৫ টি উপায় সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
- হলুদ
- আমলকি
- যোগব্যায়াম
- চিনি দেওয়া খাবারে সীমাবদ্ধতা
- লাউয়ের স্যুপ
ডায়াবেটিস এর লক্ষণ
সাধারণত ডায়াবেটিসের সূত্রপাত খুব দ্রুত ঘটে। নিচে নিম্নলিখিত উপসর্গগুলি হঠাৎ দেখা দিতে পারে।
- অতিরিক্ত প্রস্রাবের প্রবণতা
- দুর্বলতা বা ক্লান্তি
- প্রচন্ড ক্ষুধা
- তীব্র তৃষ্ণা
- অস্বাভাবিক বিরক্তি
- পেটে ব্যথা
- চুলকানি
- বমি বমি ভাব
- ঝাপসা দৃষ্টি
- অপ্রীতিকর গন্ধেরও অনুভূতি
মূলত এগুলোই হল ডায়াবেটিসের লক্ষণ আর এগুলো খুব দ্রুত ঘটে। এছাড়াও এগুলো হঠাৎ করে দেখা দিতে পারে।
ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকায় যা যা থাকতে হবে
- শাকসবজি ও ফলমূল।
- বিভিন্ন ধরনের তেল, ঘি, মাখন ইত্যাদি।
- প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার: যেমন মাছ, মাংস, ডিম, ডাল ও বিভিন্ন ধরনের বাদাম ইত্যাদি।
- দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার: যেমন ছানা, দই, ও পনির ইত্যাদি।
- শ্বেতসার সমৃদ্ধ খাবার: যেমন লাল আটার রুটি, অথবা পাউরুটি লাল বা বাদামি চালের ভাত ইত্যাদি।
কি খেলে ডায়াবেটিস হবে না
এমন অনেক কিছু আছে যা খেলে ডায়াবেটিস হয় না। আজকে এই অংশে আপনাদেরকে জানাবো যে কি কি খেলে ডায়াবেটিস হবে না। চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক যে কি খেলে ডায়াবেটিস হবে না।
- সবুজ শাকসবজি
- ডিমের সাদা অংশ
- শস্য দানা
- সবুজ চা
- টক দই
- বাদাম
- লেবু
সবুজ শাকসবজি: সবুজ শাকসবজি ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি কমায়। যেমন ফুলকপি, পাতাকপি, শালগম, বাঁধাকপি, পালং শাক ইত্যাদি খাবারে ক্যালোরি এবং কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ কম। এছাড়াও গবেষণায় দেখা গেছে যে সবুজ শাক-সবজি খেলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি ১৪ শতাংশ পর্যন্ত কমে।
ডিমের সাদা অংশ: সাধারণত ডিম হলো বেশি গঠনকারী খাদ্য। এতে উচ্চ মানের প্রোটিন রয়েছে। ডিমের সাদা অংশে উচ্চ মানের চর্বিহীন প্রোটিন এবং কম মাত্রায় কার্বোহাইড্রেট রয়েছে। যা আপনার দুই ধরনের ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সাহায্য করে।
শস্য দানা: প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় শস্যদানা মানুষের শরীরের রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। আর এর ফলে ডায়াবেটিসের সম্ভাবনা খুব কমে। এছাড়াও শস্য দানা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করে থাকে।
সবুজ চা: সাধারণত সবুজ চা মানুষের শরীরে ইনসুলিনের মত কাজ করে থাকে। এবং ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সাহায্য করে।
টক দই: আমরা সকলেই জানি যে টক দই একটি স্বাস্থ্যকর খাদ্য এতে চীনের পরিমাণ খুব কম। সাধারণত এটি রক্তে চিনির পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে। দুপুরে খাবারের সঙ্গে অথবা বিকেলের নাস্তায় টক দই খাওয়া যায়। এটি ডায়াবেটিস প্রতিরোধে ভীষণভাবে সাহায্য করে থাকে।
বাদাম: গবেষণা করে দেখা গেছে যে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি প্রায় 21 শতাংশ পর্যন্ত কমাতে পারে চিনাবাদাম। প্রতিদিনের খাদ্যের তালিকায় চিনা বাদাম বা কাজু বাদাম রাখা উচিত। এটি ডায়াবেটিস প্রতিরোধে ভীষণভাবে কাজ করে। এছাড়াও নিয়মিত বাদাম খেলে হৃদরোগের ঝুঁকিও কমে।
লেবু: লেবু জাতীয় ফল ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সাহায্য করে থাকে। গবেষণায় দেখা গেছে যে শরীরের ভিটামিন সি এর অভাবে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি রয়েছে। তবে লেবু বা লেবু জাতীয় ফল খেলে ভিটামিন সি এর অভাব পূরণ হয়। যেমন লেবু, কমলা, জাম্বুরা, এবং লাইমস ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ইনসুলিনের মত কাজ করে থাকে।
ডায়াবেটিস কমানোর ঘরোয়া উপায়
ডায়াবেটিস কমানোর চারটি ঘরোয়া পদ্ধতি নীচে সুন্দরভাবে দেয়া হলো।
- নিম
- করল্লা
- গ্রিন টি
- আমলকি
নিন: সাধারণত নিম চমৎকার উপাদান রক্তের সুগার নিয়ন্ত্রণে। প্রতিদিন দুই থেকে তিনটি নিমপাতা যদি খালি পেটে খাওয়া যায় তাহলে খুব উপকার পাওয়া যায়। যেমন এটি ইনসুলিন তৈরিতে সাহায্য করে। এছাড়াও এটি ডায়াবেটিস নিউরোপ্যাথালির রোগীদের জন্য একটি উপকারী ও কার্যকরী ঘরোয়া উপায়।
করল্লা: আপনি তিন থেকে চারটি করলা নিন এবার করলার ভেতরের বীজগুলো ফেলে দিয়ে করল্লা ব্লেন্ডারে দিয়ে জুস তৈরি করুন। এই করলার জুস নিয়মিত খাওয়া গেলে রক্তের সুগার নিয়ন্ত্রণ করবে। এটি রক্তের সুগার নিয়ন্ত্রণে খুব উপকারী।
গ্রিন টি: সাধারণত গ্রিন টি ভেষজ চা পেনক্রিয়াসের কার্যক্রম বাড়িয়ে ইনসুলিন তৈরিতে সাহায্য করে থাকে। আর তাই রক্তের সুগার নিয়ন্ত্রণে এই গ্রিন টি পান করতে পারেন।
আমলকি: ডাইবেটিকস রোগীদের জন্য প্রতিদিন দুই বেলা ২০ মিলিলিটার করে আমলকির জুস খাওয়া খুব ভালো। এছাড়াও যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তারা চাইলে প্রতিদিন দুই বেলা করে আমলকির গুঁড়োও খেতে পারেন। সাধারণত আমলকি রক্তের সুগার নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
কি কি খাবার খেলে ডায়াবেটিস বাড়ে
যেসব খাবার খেলে ডায়াবেটিস বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এই অংশে আপনাদেরকে আমরা সেই বিষয়ে বিস্তারিত জানাবো। ডায়াবেটিসে কখনোই শরীরের প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাওয়া চলবে না। চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক যে কি কি খাবার খেলে ডায়াবেটিস বাড়ে।
- কাঁচা লবণ খাওয়া এড়াতে হবে।
- অতিরিক্ত চা বা কফি ও পান খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
- বেশি বেশি ভাজা ও তৈলাক্ত খাবার এড়িয়ে যেতে হবে।
- এছাড়াও যে সব খাদ্য বা পানীয়তে শর্করার পরিমাণ বেশি থাকে সেসব বর্জন করতে হবে।
- সাধারণত ভাত, আলু, গাজর, কলা, এগুলোতে শর্করার পরিমাণ বেশি থাকে সুতরাং এই খাবারগুলি খাওয়া নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
- ফ্যাট যুক্ত খাবার বর্জন করতে হবে।
ডায়াবেটিসে কোন কোন ফল খাওয়া উচিত
সাধারণত ডায়াবেটিস হলে যেসব ফল খাওয়া উচিত। অথবা ডায়াবেটিসে যেসব ফল খাওয়া উচিত তা নিম্নলিখিত সাতটি ফল ডায়াবেটিসে খাওয়া চলে। যেমন:
- আপেল
- নাশপাতি
- কামরাঙ্গা
- কমলা
- পেঁপে
- অ্যাভোকাডো
- বেরি জাতীয় ফল ইত্যাদি
শেষ কথা
প্রিয় পাঠক আশা করি পুরো আর্টিকেলটি আপনি মনোযোগ সহকারে পড়েছেন। এই পোস্ট থেকে আপনি আশা করি ডায়াবেটিস থেকে মুক্তির ৫ টি উপায় এবং ডায়াবেটিস এর লক্ষণ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে পেরেছেন। এই আলোচনা থেকে আপনি আরো জানতে পেরেছেন, ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকায় যা যা থাকতে হবে, কি খেলে ডায়াবেটিস হবে না, ডায়াবেটিস কমানোর ঘরোয়া উপায়, কি কি খাবার খেলে ডায়াবেটিস বাড়ে, ডায়াবেটিসে কোন কোন ফল খাওয়া উচিত ইত্যাদি এগুলো সম্পর্কে আরো জানতে পেরেছেন। আজকের এই আর্টিকেলটি যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন। আরো এরকম ব্লগ পোষ্ট পেতে আমাদের সাথেই থাকুন ধন্যবাদ।
শাকিল বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url