টক দইয়ের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানুন

  

মানুষের জীবনের সকল উপকারী খাদ্যের মধ্যে রয়েছে। তার মধ্যে দই একটি অন্যতম খাবার। সাধারণত এটি দুধ থেকে তৈরি হওয়ায় এর পুষ্টিগুণ রয়েছে অধিক মাত্রায়। শুধুমাত্র টক দই পুষ্টি গুনে ভরপুর তা নয়। এতে রয়েছে শরীরের জন্য নানান উপকারী উপাদান। যেমন- আমিষ, মিনারেল, ভিটামিন ইত্যাদি। তাই প্রতিদিন খাদ্য তালিকাতে নিয়মিত টক দই রাখা অবশ্যই দরকার। কেননা নিয়মিত টক দই খেলে নানা রকম উপকার পাওয়া যায়। এখন চলুন টক দই খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেয়া যায়।

সাধারণত টকদয়ে রয়েছে বিভিন্ন উপকারী ব্যাকটেরিয়া। এরা দেহের উপকার করে থাকে। অর্থাৎ টক দই শরীরের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করে দেয়। আপনারা যারা টক দই খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে চান। তারা আমার এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

সূচিপত্র: টক দই খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

ভূমিকা

খাদ্য তালিকাতে নিয়মিত টক দই রাখা একান্ত প্রয়োজন। কারণ এই টক দইয়ে রয়েছে বিভিন্ন উপকারী ব্যাকটেরিয়া, যারা দেহের উপকার করতে সাহায্য করে। অর্থাৎ এরা শরীরের ক্ষতি ব্যাকটেরিয়াকে, ধ্বংস করে দিয়ে থাকে। এছাড়াও এই টকদইয়ে রয়েছে, প্রোটিন, ভিটামিন এ, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন৬, ভিটামিন বি ১২. ও ফসফরাস ইত্যাদির মত নানা ধরনের উপাদান। এই উপাদান গুলো শরীরের নানা উপকার করে থাকে। শরীরে সুস্থ্যের জন্য এই পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ টক দই দারুণ ভূমিকা পালন করে। ডেইলি এই টক দই খেলে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। চলুন টক দই খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক।

টক দই খাওয়ার উপকারিতা 

টক দই খাওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে। কারণ টক দই রয়েছে, ক্যালসিয়াম, প্রোটিন, ফসফরাস ও প্রয়োজনীয় ফ্যাট, ভিটামিন এ, ভিটামিন বি ১২, ভিটামিন বি ৬, সহ প্রয়োজনের নানা উপাদান রয়েছে। এই উপাদান গুলো শরীর স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য অনেকটাই কার্যকরী। শরীর স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য অবশ্যই দই খাওয়া উচিত। তবে অতিরিক্ত দই খাওয়া যাবে না। টক দই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলে, এবং হজম শক্তি বৃদ্ধি করে। আবার প্রোবায়োটিক অস্ত্রের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে বেশ সাহায্য করে থাকে। ওজন কমাতে সাহায্য করে। ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ রাখে

আরও পড়ুন: প্রতিদিন ডিম খাওয়ার উপকারিতা

এছাড়াও টক দই দুধের ঘাটতি পূরণ করে থাকে। আপনারা যারা দুধ খেতে পারেন না তাদের ক্ষেত্রে দই খাওয়া অনেক উপকারী। এই দই খাওয়ার মাধ্যমে দুধের অভাব পূরণ করা যায়, অনেকটাই। দুধের থেকে টক দইয়ে অধিক মাত্রায় ক্যালসিয়াম বেশি থাকে। আবার এতে ভিটামিনের পরিমাণ অনেক বেশি। তাই আপনারা যারা দুধ খেতে পারেন না। তারা দুধের ঘাটতি পূরণ করার জন্য, নিয়মিত টক দই খেতে পারেন।

টক দই খাওয়ার অপকারিতা

সাধারণত দই খাওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো। কিন্তু অতিরিক্ত পরিমাণে দই খেলে দেহের ক্ষতি হতে পারে। আবার যারা নানারকম রোগে আক্রান্ত তাদের জন্য দই খাওয়া খুবই ক্ষতিকর। যেমন- বাতের রোগী, ও ডায়াবেটিসের রোগীর জন্য দই খাওয়া বিষের মতো।

বাতের সমস্যা হতে পারে:

  • যাদের বাতের সমস্যা আছে। তাদের জন্য দই খাওয়া বিষের মতো। কারণ এই মানুষদের দই খেলে জয়েন্টের ব্যথার সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। এর কারণে নানা সমস্যার আশঙ্কা হতে পারে। এজন্য তারা দই খেতে চাইলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

ডায়াবেটিস রোগীদের দই সাবধানে খেতে হবে:

  • কারণ আপনি যদি ডায়াবেটিসের রোগী হয়ে থাকেন, তবে আপনার জন্য সতর্ক হওয়া খুবই জরুরী। আপনি যদি অতিরিক্ত পরিমাণে দই খান তাহলে তা আপনার স্বাস্থ্যের অবনতি করাতে পারে। এসবের কারণে আপনার সমস্যা হতে পারে। আবার আপনার ডায়াবেটিস ও বাড়াতে পারে। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের দই সাবধানে খাওয়া উচিত।
দই খেলে গলায় টনসিল হতে পারে:
  • অতিরিক্ত দই খেলে আপনার গলায় সমস্যা হতে পারে। তা ঠান্ডা হোক বা গ্রীষ্ম এতে আপনার গলার পেশিতে ফুলে যেতে পারে। যার কারণে আপনার গলায় টনসিল হতে পারে। তবে দুই খান, কিন্তু খুব অল্প পরিমাণে।
 অতিরিক্ত টক দই খাবেন না:
  • অতিরিক্ত টক দই আপনার শরীরের জন্য খুব ক্ষতিকারক। কারণ এর জন্য বুক জ্বালা এবং গ্যাসের সমস্যা হতে পারে। তার জন্য খুব অল্প পরিমাণে দই খাবেন। আবার একেবারে দীর্ঘ সময় ধরে রাখা দই একদমই খাবেন না।

রাতে টক দই খেলে কি হয়

সাধারণত রাতের বেলায় খাবার খাওয়ার পর এক বাটি দই খেলে কিন্তু শরীরের বেশ উপকার হয়। তবে আপনি যদি একজন সুস্থ সবল মানুষ হন তাহলে সব চিন্তাকে মেরে ফেলে দিয়ে। আজ থেকে রাতের বেলা খাবার শেষে এক বাটি করে দই খাওয়া শুরু করুন। কারণ এই টক দই খেলে নানা রকম রোগের সমস্যার সমাধান হতে পারে। এটা আপনি একবার ট্রাই করুন। তারপর দেখুন কি হয়। আসলে এমনটা করলে নানাবিধ শারীরিক উপকার মিলে। এই দই খেলে অনেক ধরনের রোগ কমে যায়। যেমন-

আরও পড়ুন: মিষ্টি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

  • ওজন কমে
  • অ্যাংজাইটিল প্রকোপ কমে
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটে
  • হাড় এবং দাঁতের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে
  • হজম শক্তি চাঙ্গা হয়ে ওঠে
  • হার্টের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়
  • ভিটামিনের ঘাটতি দূর হয়
  • ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়

প্রতিদিন টক দই খেলে কি হবে

প্রতিদিন এই টক দই খেলে অনেক ধরনের ছোট-বড় অসুখ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। তাই প্রতিদিন এক বাটি টক দই খাওয়ার অভ্যাস করে তুলতে হবে। শিশুদেরকেউ উৎসাহিত করতে পারেন, টক দই খাওয়ার জন্য। এই টক দই যেমন হজনের সাহায্য করে। তেমনি হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁক ও কমাতে সাহায্য করে। প্রতিদিন টক দই খেলে যেসব সমস্যার সমাধান হবে। সেগুলোর নিচে দেওয়া হলো-

প্রতিদিন টক দই খেলে যা যা হয়:
  • টক দই জীবাণুঘটিত বিভিন্ন ওষুধের সঙ্গে লড়াই করে
  • প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস পাওয়া যায় এই দই থেকে ফলে দাঁত ও হাড় ভালো থাকে
  • টক দই কোলেস্টেরল এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে এর ফলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুকিও কমে
  • নিয়মিত দই খেলে চুল ও ত্বক থাকবে উজ্জ্বল
  • টক দই শরীরের দূষিত পদার্থ বা টক্সিন জমতেদেয় না
  • খাবার খাওয়ার পর খানিকটা দই খেলে হজম হয় দ্রুত

টক দই কখন খাওয়া উচিত

সাধারণত টক দই দুপুরের খাবারের পর খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায়। কারণ তখন এ থেকে দেহ পুরো পুষ্টি পায়। কিন্তু টক দই যখনই খাওয়া হোক না কেন দিনে ৩০০ থেকে ৫০০ গ্রাম এর বেশি টক দই খাওয়া উচিত না। আপনি চাইলে বোরহানি বা শরবত বানিয়ে এই দই খেতে পারবেন। আবার এমনিতেও খাওয়া যাবে। টক দই এভাবে খেলেই বেশি উপকার পাওয়া যায়। এছাড়াও আপনি বিভিন্ন ফলের সাথে মিশিয়ে এই দই খেতে পারবেন। সুতরাং যেভাবে খাওয়া হোক না কেন, টক দই এ থেকে উপকার অবশ্যই পাবেন।

প্রতিদিন কত গ্রাম দই খাওয়া উচিত

প্রতিদিন প্রায় একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দিনে ৩০০ থেকে ৫০০ গ্রাম পর্যন্ত দই খাওয়া যেতে পারে। কিন্তু এর বেশি না খাওয়াই ভালো। প্রয়োজনের থেকে বেশি দই খেয়ে ফেললে শরীরের অত্যাধিক ক্যালসিয়াম সৃষ্টির কারণ হতে পারে। যা আপনার স্বাস্থ্যের জটিলতা বাড়াতে পারে। একটা বিষয় আপনি মনে রাখবেন মিষ্টি দইয়ের থেকে টক দই খাওয়া বেশি উপকারী।

উপসংহার

টক দই খেলে অনেক উপকারী হয়। সাধারণত টক দই আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলে, এবং হজম শক্তি বৃদ্ধি করে। আবার প্রোবায়োটিক অস্ত্রের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে বেশ সাহায্য করে থাকে। ওজন কমাতে সাহায্য করে। ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ রাখে। আপনারা যারা জানতে চেয়েছিলেন টক দই খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে। আমরা কিন্তু আমাদের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে সমস্ত কিছু বিস্তারিত জানিয়েছি। আশা করছি আপনারা মনোযোগ সহকারে আর্টিকেলটি পড়েছেন। আরো এরকম নানা রকম তথ্য পেতে আমার এই ওয়েবসাইটটি প্রতিদিন ভিজিট করুন। ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

শাকিল বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url