জ্বরে আনারসের উপকারিতা ও আনারস খাওয়ার সঠিক নিয়ম
বর্তমানে ঋতু পরিবর্তনের ফলে সব বয়সের মানুষ ঠান্ডা জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে। হঠাৎ করে ভাইরাস জনিত জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে, অনেক মানুষ। সাধারণত হঠাৎ করে জ্বর আসলে আমরা অনেকেই ওষুধ খেয়ে থাকি। কিন্তু জ্বর আসলেই যে ওষুধ খেতে হবে তার কোন মানে নেই। এমন অনেক খাবার আছে যা খেলে জ্বর এমনিতেই সেরে যায়। জ্বর ভালো হওয়ার জন্য আনারস খুবই উপকারী। আসুন জ্বরে আনারসের উপকারিতা ও আনারস খাওয়ার সঠিক নিয়ম, সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
পুষ্টিগুনে ভরপুর ফল হচ্ছে আনারস। ফলটিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, এবং সি, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, এবং ফসফরাস, এসব উপাদান রয়েছে। আমাদের দেহের পুষ্টির অভাব পূরণে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে এই আনারস। এখন আপনারা যারা জ্বরে আনারসের উপকারিতা ও আনারস খাওয়ার সঠিক নিয়ম, সম্পর্কে জানতে চান। তারা আমার এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
সূচিপত্র: জ্বরে আনারসের উপকারিতা ও আনারস খাওয়ার সঠিক নিয়ম
- ভূমিকা
- জ্বরে আনারসের উপকারিতা
- আনারস খাওয়ার সঠিক নিয়ম
- আনারসে কি ভিটামিন আছে
- গর্ভাবস্থায় আনারস খেলে কি হয়
- বেশি আনারস খেলে কি হয়
- আনারসের পুষ্টিগুণ
- উপসংহার
ভূমিকা
আমরা সবাই জানি যে আনারস রসালো ও তৃপ্তিকর সুস্বাদু একটি ফল। ফলটিতে আঁশ ও ক্যালোরি ছাড়াও প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, এবং ফসফরাস, থাকে। কোলেস্টেরল ও চর্বিমুক্ত বলে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় এর জুরি নেই। মানব দেহের জন্য আনারস খুবই উপকারী। কারণ এতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এ, এবং সি, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ফসফরাস, রয়েছে। তাই স্বাস্থ্য সুরক্ষায় এই ফলের জুরি মেলা ভার। এই সময় ভাইরাসজনিত জ্বরে ভুগছেন অনেকেই। ডেঙ্গু, জন্ডিসহ, যেকোনো ভাইরাসজনিত জ্বরকে ভাইরাস জ্বর বলা হয়ে থাকে। তবে জ্বরে শুধু ওষুধ খেলে হবে না। জ্বর সারাতে আনারস খুব কাজে দেয়। তাই জ্বর হলে আনারসের জুস খেতে পারেন। তাহলে চলুন জ্বরে আনারসের উপকারিতা ও আনারস খাওয়ার সঠিক নিয়ম, সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
জ্বরে আনারসের উপকারিতা
জ্বর সারাতে আনারস খুব কাজে দেয়। তাই জ্বর হলে আনারসের জুস খেতে পারেন। আনারসে ভিটামিন এ, বি, ও সি, এর একটি উৎকৃষ্ট উৎস। আনারস ফলটিতে রয়েছে ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ফসফরাস, বিটা, ক্যারোটিন, শর্করা, ফাইবার, আইরন, মিনারেল, প্রোটিন ও সহজপাচ্য ফ্যাট খুবই অল্প পরিমাণে রয়েছে। প্রতি কেজি আনারসে আমরা প্রায় ৫০০ ক্যালোরি শক্তি পেয়ে থাকি। এই আনারসে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি বিদ্যমান থাকায়। এবং এতে ফ্যাট এর পরিমাণ একেবারে কম হওয়ার কারণে এই ফল ওজন কমাতে খুব সাহায্য করে।
আরও পড়ুন: কাজু বাদাম খাওয়ার উপকারিতা - কাজু বাদাম খাওয়ার সঠিক নিয়ম
আনারস রুচি বর্ধক ফল। তাই মুখে রুচি না পেলে আনারস খেতে হবে। কারণ এতে প্রচুর ক্যালসিয়াম, মিনারেল, ম্যাঙ্গানিজ ও ভিটামিন থাকে। আনারস মুখের ভেতরের জীবাণুর আক্রমণ রোধ করে। ছাড়াও আনারস সারাদিনের ক্লান্তি দূর করতে সাহায্য করে। আনারস জুস করে খেতে পারেন। কিংবা সালাদে করে খেতে পারেন। এই আনারস ফলটি দ্রুত জ্বর, সর্দি, কাশির সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে সাহায্য করে।
আনারস খাওয়ার সঠিক নিয়ম
ফল খাওয়া প্রায় সব স্বাস্থ্য সমস্যা সমাধান করতে পারে। আনারসের মধ্য রয়েছে স্বাস্থ্য সমস্যা সমাধানের হাজারো গুণ। কারণ এতে উচ্চমাত্রায় পটাশিয়াম, ফাইবার, ভিটামিন সি, ইত্যাদি রয়েছে। আনারস আমাদের দেহের পুষ্টি যোগানোর পাশাপাশি ক্যালোরি নিয়ন্ত্রণ করে। এবং দীর্ঘ স্থায়ী রোগের ঝুঁকি কমায়। সকালে খালি পেটে এক গ্লাস পানি এবং আনারস ফল বা জুস খাওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে খুবই ভালো। কারণ সকালে আমাদের মোটা বালিজম বেশি হয়। এই সময় আমাদের পাচনতন্ত্র শর্করা ভেঙ্গে দেয়। যা শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টি গুলি দূরত্ব শোষণ করতে সাহায্য করে।
আবার এটি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সরবরাহ করে। যা আমাদের শরীরকে বিভিন্ন সংক্রমণ মুক্ত প্রদাহ ইত্যাদি থেকে রক্ষা করে থাকে। এই কারণে ফলকে শক্তির পাওয়ার হাউজও বলা হয়ে থাকে। আপনি যদি নিয়মিত ব্যায়াম করেন তাহলে ব্যায়াম শুরুর আগে এবং পরে আনারস খাওয়া খুবই ভালো। রাতে ঘুমানোর আগে আনারস খাওয়া আপনার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে। কারণ এটি রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়াতে পারে। এবং ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে ।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন যে, প্রধান খাবার এবং ফল খাওয়ার মধ্যে অন্তত 30 মিনিটের ব্যবধানে রাখুন। খাওয়ার ঠিক আগে বা পরে আনারস খেলে ভোজনের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এর কারণ ফাইবারের পরিমাণ বেশি। এবং ফাইবার হজম হতে সময় লাগে। প্রধান খাবারের সাথে আনারস খাওয়ার ডায়াবেটিকস রোগীদের জন্য বেশি ক্ষতিকর। কারণ এটি রক্তের চীনের পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে পারে।তার জন্য ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে আনারস এবং খাবারের মধ্যেও কমপক্ষে ২ ঘন্টা ব্যবধান রাখতে হবে।
আনারসে কি ভিটামিন আছে
আনারস আমাদের দেহের পুষ্টি যোগানোর পাশাপাশি ক্যালোরি নিয়ন্ত্রণ করে। এবং দীর্ঘ স্থায়ী রোগের ঝুঁকি কমায়। সকালে খালি পেটে এক গ্লাস পানি এবং আনারস ফল বা জুস খাওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে খুবই ভালো। কারণ আনারসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, এবং ভিটামিন সি, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, এসব উপাদান রয়েছে। আনারস আমাদের দেহের পুষ্টির অভাব পূরণে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। আনারসের মধ্য রয়েছে স্বাস্থ্য সমস্যা সমাধানের হাজারো গুণ।
গর্ভাবস্থায় আনারস খেলে কি হয়
আনারস একটি পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ ফল। তবে এ ফলটি থেকে গর্ভবতী নারীকে একটু দূরে থাকতে হবে। কারণ আনারসের মধ্যে রয়েছে উচ্চমাত্রায় ব্রোমেলেইন। এই এনজাইমটি সারভিক্সকে নরম করে দিয়ে থাকে। এবং জলবায়ু সংকোচনকে উদ্দীপ্ত করে। এই কারণে আগেভাগেই সন্তান জন্ম হয়ে যেতে পারে। যেটি মা ও শিশু উভয়ের জন্য ক্ষতিকর। এছাড়াও ব্রোমেলেইন গর্ভপাতও ঘটাতে পারে। তাই গর্ভাবস্থায় আনারস খাওয়া এড়িয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
বেশি আনারস খেলে কি হয়
বেশি আনারস খেলে অনেকগুলো বিপদ হতে পারে। সেগুলো নিচে সুন্দরভাবে দেওয়া হলো- মনোযোগ সহকারে পড়ে নিবেন।
- অতিরিক্ত আনারস খেলে প্রচন্ড খিদে পেতে পারে। তার সঙ্গে বমি বমি ভাব হতে পারে। এমনকি পেটের গোলমাল শুরু হতে পারে। এটি হলে শরীরের হাল বেহাল হয়ে যেতে সময় লাগবে না।
- আনারসে প্রচুর পরিমাণে এনজাইম থাকে। এটি শরীরে মাত্রাতিরিক্ত গেলে ত্বকের প্রদাহ ডায়রিয়া, বমির মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- কোন কোন মহিলাদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত আনারস খাওয়া একটি বিপদ ডেকে আনতে পারে। তাদের যদি সেই সময় ঋতু চলে তাহলে তাদের রক্তক্ষরণ বিপুল পরিমাণে বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
- এছাড়াও অতিরিক্ত আনারস খেলে। মাথা ঘোরা, অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, মাথা ব্যথা, পেটে মারাত্মক ব্যথা, অনিদ্রা, দুর্বলতা, এবং চরম খিদের অনুভূতি দেখা দিতে পারে। আর এটি আপনার বড় ধরনের বিপদ ডেকে আনতে পারে।
আনারসের পুষ্টিগুণ
আনারস একটি সুস্বাদু ফল। এর ফলের বাইরের আবরণ কাটার মত। এই আনারস শরীরের পানির চাহিদা পূরণ করে। খেতেও রসালো, এই ফলে আছে অনেক পুষ্টি যেমন- সাধারণত এক কাপ আনারসে ১৬৫ গ্রাম আছে। ক্যালোরি আছে ৮২. ৫ গ্রাম। প্রোটিন আছে ১ গ্রাম। কার্বোহাইড্রেট আছে ২১.৬ গ্রাম। ভিটামিন সি ১৩১ শতাংশ। ম্যাগনেসিয়াম ৫ শতাংশ। ভিটামিন বি ৯ শতাংশ। কপার ৯ শতাংশ। আয়রন ৩ শতাংশ। ও পটাশিয়াম ৫ শতাংশ।
উপসংহার
প্রিয় পাঠক আশা করি পুরো আর্টিকেলটি আপনি মনোযোগ সহকারী পড়েছেন। এই পোস্ট থেকে আপনি আশা করি জ্বরে আনারসের উপকারিতা ও আনারস খাওয়ার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। এই আলোচনা থেকে আপনি আরো জানতে পেরেছেন যে, আনারসে কি ভিটামিন আছে, গর্ভাবস্থায় আনারস খেলে কি হয়, বেশি আনারস খেলে কি হয়, এবং আনারসের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে আরো অবগত হয়েছেন। আজকের এই আর্টিকেলটি যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন। আমাদের এই ওয়েবসাইটে এ ধরনের সুন্দর সুন্দর ব্লক পোস্ট করা হয়। আপনার সুস্থতা কামনা করে আজ এখানেই শেষ করছি। এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
শাকিল বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url