ক্যান্সার কেন হয়- ক্যান্সার থেকে মুক্তির উপায়
ক্যান্সার একটি মরণব্যাধিক রোগ। সাধারণত জিনগত ও পরিবেশগত এর কারণে ক্যান্সার হয়। প্রায় ১৬ কোটি লোকের এই দেশ। শহরে এবং গ্রামে অসংখ্য রোগী ক্যান্সারে ভুগছে। বেশিরভাগ রোগী চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। কিংবা প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পাচ্ছে না। শেষ পর্যায়ে তারা চিকিৎসকের শরণাপন্ন হচ্ছে। এখনকার এই ডিজিটাল যুগে ক্যান্সার থেকে মুক্তির নানা উপায় বের হয়েছে। এখন চলুন ক্যান্সার কেন হয় ক্যান্সার থেকে মুক্তির উপায় কি তা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক।
গবেষণায় দেখা গেছে যে, দীর্ঘ সময় ব্যথা বা কাশি হলে ক্যান্সারের প্রথম উপসর্গ
হিসেবে গণ্য করা হয়। ক্যান্সার শব্দটির সাথে আমরা কম বেশি সবাই পরিচিত। আর এই
ক্যান্সার রোগের মৃত্যুর হার সব থেকে বেশি পাওয়া গিয়েছে। এখন আপনারা যারা জানতে
চান। ক্যান্সার কেন হয় এবং ক্যান্সার থেকে মুক্তির উপায় কি। তারা আমার এই
আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
সূচিপত্র: ক্যান্সার কেন হয়- ক্যান্সার থেকে মুক্তির উপায়
- ভূমিকা
- ক্যান্সার কেন হয়
- ক্যান্সার থেকে মুক্তির উপায়
- ক্যান্সার হলে কতদিন বাঁচে
- ক্যান্সার রোগীর মৃত্যুর লক্ষণ
- ক্যান্সার কত প্রকার ও কি কি
- ক্যান্সার হলে কি কি খেতে হয়
- উপসংহার
ভূমিকা
সাধারণত জিনগত ও পরিবেশগত এর কারণে ক্যান্সার হয়। প্রায় ১৬ কোটি লোকের এই দেশ। শহরে এবং গ্রামে অসংখ্য রোগী ক্যান্সারে ভুগছে। জিনগত অস্বাভাবিকতা ও জিনের নানারকম ক্ষতির কারণে ক্যান্সারের প্রদুর্ভাব হয়। এছাড়াও নানা রকম ক্ষতিকর পদার্থের সংস্পর্শে আসার ফলে ক্যান্সার হতে পারে। আমরা অনেকেই জানি না যে ক্যান্সার কিভাবে সৃষ্টি হয়। এবং ক্যান্সার থেকে মুক্তির উপায় কি তাও জানিনা। আপনার কি দীর্ঘ সময় ধরে কোন নির্দিষ্ট জায়গায় ব্যথা বা ক্ষত হয়েছে।
তাহলে কিন্তু বসে না থেকে অতি তাড়াতাড়ি ডাক্তারের পরামর্শ নিন। কারণ এক গবেষণায় দেখা গেছে যে, যখন দীর্ঘ সময় ধরে ব্যথা বা কাশি হয়। তখন তাহলে সেটিকে ক্যান্সারের প্রথম উপসর্গ হিসাবে গণ্য করা হয়। এখন চলুন ক্যান্সার কেন হয় এবং ক্যান্সার থেকে মুক্তির উপায় কি তা সম্পর্কে জানা যাক।
ক্যান্সার কেন হয়
ক্যান্সার কোন সাধারণ রোগ নয়। এটি ডিএনএ মিউটেশন বা রূপান্তর ক্যান্সার প্রধান একটি কারণ। এখনো সঠিকভাবে জানা যায়নি যে ক্যান্সার কোন কারণে হয়ে থাকে। তবে দেহের এই স্বাভাবিক কোষবিভাজন যখন অস্বাভাবিকভাবে বাড়তে শুরু করে তখন ধারণা করা হয়। যে এই ক্যান্সার রোগটি দেহে আঘাত হানে। তবে সাধারণভাবে ধারণা করা হয় যে ক্যান্সারের ক্ষতিকর কারণ রাসায়নিক উপাদান। যেমন- ধূমপান, তামাক সেবন, হরমোন, পেশা, অভ্যাস, আঘাত, প্রজনন বিকৃত যৌন আচরণ, বায়ু ও পানি দূষণ।
আরও পড়ুন: হস্তমৈথুন থেকে বিরত থাকার জন্য কিছু টিপস
(খাদ্য, যেমন- অতিরিক্ত চর্বি বা অধিক পরিমাণ চর্বিযুক্ত খাদ্য,) বিভিন্ন বর্ণগত, ভৌগোলিক ও পরিবেশগত প্রভাব, জীবন যাপন পদ্ধতিগত, ইত্যাদি। এবং প্যারাসাইট ও ভাইরাস। সাধারণত এইসব নানা রকম সর্বজনীয় ভাবে স্বীকৃত সৃষ্টির কারণে ক্যান্সার হয়ে থাকে। কিন্তু সাধারণভাবে প্রায় ৯০ শতাংশ এসব এড়িয়ে চলা সম্ভব অর্থাৎ এগুলো এড়িয়ে চললে ক্যান্সার থেকে নিরাময় পাওয়া সম্ভব।
ক্যান্সার থেকে মুক্তির উপায়
ক্যান্সার থেকে মুক্তি পেতে চাইলে আপনাকে অনেক কিছু মেনে চলতে হবে। সাধারণত ক্যান্সার থেকে মুক্তির উপায় খুঁজতে গিয়ে যে বিষয়গুলো খুঁজে পাওয়া গেছে। সেগুলো নিয়ে নিচে আলোচনা করা হলো- আপনারা সবাই মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
- অনিয়মিত খাদ্যভাস ক্যান্সারের কারণ। এর জন্য প্রচুর পরিমাণে সবুজ শাকসবজি এবং সিজনাল ফল খেতে হবে।
- নিয়মিত ব্যায়াম করলে শরীরের ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে যাবে। তাই কিছুটা সময় করে অন্তত ৩০ মিনিট ব্যায়াম করুন।
- ধুমপান পরিহার করতে হবে। কারণ ধূমপান থেকেই প্রায় ৯০% ক্যান্সার রোগের সৃষ্টি হয়ে থাকে।
- অনিয়ন্ত্রিত ও অব্যবস্থিত যৌন সম্পর্ক ক্যান্সার ছাড়াতে পারে। এজন্য অনিয়ন্ত্রিত যৌন সম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করুন।
- অতিরিক্ত ভাজাপোড়া খাবার ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়। এর জন্য সবুজ শাকসবজি খাবার রান্না করে খেতে হবে।
- সূর্যের তাপের রশ্মির কারণে স্কিন ক্যান্সার হতে পারে। এর জন্য আপনি নিজেকে সূর্যের তাপমাত্রার থেকে বাঁচিয়ে রাখুন।
- আপনার পরিবারের কারো যদি ক্যান্সার থাকে। তাহলে আপনি নিজে সচেতন হোন। এবং তার সাথে সাথে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে থাকুন।
ক্যান্সার হলে কতদিন বাঁচে
ক্যান্সার একটি মারাত্মক রোগ। তাই ক্যান্সার হলে কত দিন বাঁচবেন এমনটা আপনারা অনেকেই জানতে চান। তবে সব ধরনের ক্যান্সার মারাত্মক হয় না। কিন্তু বেশিরভাগ ক্যান্সার মারাত্মক হয়ে থাকে। ক্যান্সার বলতে শরীরের অস্বাভাবিক কোষের অনিয়ন্ত্রিত বৃদ্ধি এবং বিভাজনকে বোঝায়। ক্যান্সারের একটি জটিল রোগ যার বিভিন্ন প্রকার ও ধাপ রয়েছে। রোগ নিয়ন্ত্রণ এবং বেঁচে থাকার জন্য বিভিন্ন ধরনের কারণ এর ওপর নির্ভর করে। যেমন-
- ব্যক্তির সামগ্রিক স্বাস্থ্য
- প্রাপ্ত চিকিৎসা কার্যকারিতা
- রোগ নিয়ন্ত্রণের পর্যায়
- ক্যান্সারের ধরন
সাধারণত ক্যান্সারের ধরন এবং পর্যায় সে সাথে অন্যান্য আরো কারণ গুলি সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট বিবরণ না জেনে কেউ ক্যান্সারের সাথে কতদিন বেঁচে থাকতে পারে। তার একটি নির্দিষ্ট উত্তর প্রধান করা কখনোই সম্ভব নয়। কারণ এটি একটি খুবই মারাত্মক রোগ তবে চিকিৎসার মাধ্যমে এটি ভালো পূর্বাভাস থাকতে পারে।
ক্যান্সার রোগীর মৃত্যুর লক্ষণ
সাধারণত কয়েকটি মূল লক্ষণ রয়েছে। যা নির্দেশ করতে পারে যে আপনি ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকিতে আছেন কিনা। ১০ টি আশ্চর্যজনক ক্যান্সারের লক্ষণ রয়েছে যার ওপর লক্ষ্য রাখতে হবে।
- চরম ক্লান্তি এবং দুর্বলতা
- ব্যথা বৃদ্ধি
- গিলতে অসুবিধা
- ত্বকের পরিবর্তন
- মানসিক অবস্থা পরিবর্তন
- শ্বাসযন্ত্রের পরিবর্তন
- প্রক্রিয়াশীলতা হ্রাস
- প্রসাব এবং অন্ত্রের ফাংশনে পরিবর্তন
- ক্ষুধা হ্রাস
- প্রগতিশীল ওজন হ্রাস
অন্যান্য সাধারণত লক্ষণগুলির মধ্যে শ্বাসকষ্ট, কাশি, বা প্রস্রাবের রক্ত, মাথা ঘোরা, মাথা ব্যথা, এবং খিচুনি অন্তর্ভুক্ত। এগুলি ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে। তাই আপনি যদি এই উপসর্গগুলির কোনটির অনুভব করেন। তাহলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব একজন ডাক্তারের সাথে দেখা করুন।
ক্যান্সার কত প্রকার ও কি কি
সাধারণত গবেষক বা বিজ্ঞানীদের ভাষায় মানবদেহের কোষ গুলির অস্বাভাবিক বৃদ্ধিকে ক্যান্সার বলে। আবার এই ক্যান্সারকে ম্যালিগেন্সিও বলা হয়। এখন পর্যন্ত পৃথিবীতে প্রায় ১০০ টিরও বেশি নানা ধরনের ক্যান্সার পাওয়া গিয়েছে। আর সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো স্তনের ক্যান্সার, ফুসফুসের ক্যান্সার, কেলন ক্যান্সার, ত্বকের ক্যান্সার, এবং প্রোস্টেট ক্যান্সার, ইত্যাদি। কিন্তু বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী ক্যান্সারকে ৪ ভাগে ভাগ করা যেতে পারে। যেমন-
সারকোমা: এই ক্যান্সার হাড়, চর্বি, পেশী, কারটিলেজ, রক্তনালীগুলি অন্যান্য সরঞ্জাম বা সহায়ক টিস্যুতে যে ক্যান্সার শুরু হয়। তাকেই সারকোমা ক্যান্সার বলে।
লিউকোমিয়া: এই ক্যান্সার রক্তের গঠনের টিস্যু থেকে শুরু করে। যেমন- অস্থিমজ্জা ও প্রচুর সংখ্যক অস্বাভাবিক রক্ত কোষ তৈরি করে থাকে। এবং রক্তের প্রবেশ করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট করে দেয়।
কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের ক্যান্সার: এই ক্যান্সার মস্তিষ্ক এবং মেরুদন্ডের টিস্যু থেকে শুরু করে। এই ক্যান্সার গুলি কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের স্যার হিসেবে পরিচিত।
কার্সিনোমা: সাধারণত এই ক্যান্সার ত্বকে বা টিস্যুতে শুরু হয়ে যায়। অভ্যন্তরীণ আঙ্গুল গুলির আবরণ করে, আক্রান্ত করে। যেমন- ত্বক, ফুসফুস, কেলন, ডিম্বাশয়ের ক্যান্সার ইত্যাদি।
ক্যান্সার হলে কি কি খেতে হয়
আরও পড়ুন: জন্ডিসের লক্ষণ জন্ডিস হলে কি করবেন
উপসংহার
প্রিয় পাঠক বন্ধুরা আশা করি আপনারা সবাই পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়েছেন। এই পোস্ট থেকে আশা করি আপনারা ক্যান্সার কেন হয়, ক্যান্সার থেকে মুক্তির উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। এই আলোচনায় থেকে আপনারা আরো জানতে পেরেছেন যে, ক্যান্সার হলে কতদিন বাঁচে, ক্যান্সার রোগীর মৃত্যুর লক্ষণ, ক্যান্সার কত প্রকার ও কি কি, এবং ক্যান্সার হলে কি কি খেতে হয়, এই বিষয়ে জানতে পেয়েছেন। আজকের এই আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন। আমাদের এই ওয়েবসাইটে নানা ধরনের সুন্দর সুন্দর ব্লক পোস্ট করা হয়। আপনাদের সুস্থতা কামনা করে আজকে এখানেই শেষ করছি। এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ।
শাকিল বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url