পুরুষদের জন্য খেজুরের উপকারিতা- খেজুর খাওয়ার সঠিক নিয়ম

খেজুর একটি পুষ্টিকর খাবার। খেজুর পুরুষদের জন্য অত্যন্ত উপকারী। কারণ খেজুরে রয়েছে প্রোটিন, পটাশিয়াম, ফাইবার, কার্বোহাইড্রেট, ক্যালোরি, ম্যাগনেসিয়াম, এবং কপার সমৃদ্ধ। এছাড়াও খেজুরে রয়েছে আয়রন ও ভিটামিন। খেজুর খেলে শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি পায়। এবং দুর্বলতা দূর হয়। পুরুষরা নিয়মিত খেজুর খেলে শুক্রানু সংখ্যা বাড়তেও সাহায্য করবে। এখন চলুন পুরুষদের জন্য খেজুরের উপকারিতা ও খেজুরের সঠিক নিয়ম। সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক।

পুরুষদের জন্য প্রতিদিন খেজুর খাওয়ার অনেক উপকারী। কিন্তু শুধু খেজুর খেলে হবে না। এর সঠিক নিয়মও জানতে হবে। এই পুষ্টিকর খেজুর পুরুষদের জন্য অত্যন্ত উপকারী। আপনারা যারা, পুরুষদের জন্য খেজুরের উপকারিতা ও খেজুরের সঠিক নিয়ম সম্পর্কে জানতে চান। তারা আমার এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

সূচিপত্র: পুরুষদের জন্য খেজুরের উপকারিতা- খেজুর খাওয়ার সঠিক নিয়ম

ভূমিকা

খেজুর পুরুষদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত কার্যকরী। শুধু তাই নয়, খেজুর রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে থাকে। খেজুর শারীরিক ও মানসিক শক্তিবর্ধক। কারণ খেজুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে খাদ্য উপাদান। যা আমাদের শারীরিক ও মানসিক শক্তি বৃদ্ধিসহ হজম শক্তি, যৌন শক্তি, এবং রোগ প্রতিরোধে ক্ষমতা বৃদ্ধি করে থাকে। খেজুরের পুষ্টিগুণ পুরুষ ও মহিলা উভয়ের জন্যই উপকারী। কারণ খেজুরে রয়েছে ক্যালোরি, কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফাইবার, পটাশিয়াম, কপার, এবং ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ। এছাড়াও খেজুরের আয়রন ও ভিটামিন রয়েছে। আবার নিয়মিত খেজুর খেলে পুরুষদের শুক্রাণু সংখ্যা বাড়াতে সাহায্য করে। এখন চলুন পুরুষদের জন্য খেজুরের উপকারিতা ও খেজুর খাওয়ার সঠিক নিয়ম। সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক।

পুরুষদের জন্য খেজুরের উপকারিতা

সাধারণত খেজুরের পুষ্টিগুণ পুরুষ ও মহিলা উভয়ের জন্য উপকারী। কারণ খেজুরের রয়েছে অনেক আয়রন। খেজুর হার্ট, উচ্চ রক্তচাপ, কোষ্ঠকাঠিন্যসহ একাধিক সমস্যা ঠেকাতে সাহায্য করে থাকে। এছাড়াও বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এই যুগে নিজেকে সুস্থ এবং সচর রাখতে খেজুর খাওয়া খুবই জরুরী। গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত খেজুর প্রাণশক্তি বাড়ায়। এবং দেহে মনোবল তৈরি করে। এই ফলের আশ্চর্য নিরাময় শক্তি রয়েছে। কারণ এতে রয়েছে খনিজ, আয়রন, চিনে, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, জাতীয় অনেক উপকারী উপাদান। 

আরও পড়ুন: প্রতিদিন ডিম খাওয়ার উপকারিতা ডিম খাওয়ার সঠিক নিয়ম 

এই পুষ্টিকর খেজুর খাওয়ার অনেকগুলি স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। আপনি কি জানেন যে এতে পুরুষরা বেশি উপকৃত হয়। খেজুর খাওয়ার ফলে যৌনশক্তির উন্নতি করে। তবে শুক্রানুর সংখ্যাও বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়াও লিউটেন, জিক্সটেন, এবং ভিটামিন এ সমৃদ্ধ। খেজুর দৃষ্টি শক্তি বাড়ায়। রেটিনা ভালো রাখে। এবং রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করে।

খেজুর খাওয়ার সঠিক নিয়ম

আপনারা সবাই প্রতিদিন সকাল বেলায় খেজুর খাবেন। এতে সারাদিনের জন্য শক্তি আপনার দেহে সঞ্চিত হয়ে থাকবে। চলুন খেজুর খাওয়ার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

  • সাধারণত খেজুর শুকিয়ে খাওয়ার চাইতে ভিজিয়ে খাওয়া উপকারী। আপনি রাতে শোয়ার আগে এক গ্লাস পানিতে কয়েকটা খেজুর ভিজিয়ে রাখুন। এরপর সকালে উঠে সেই পানিসহ খেজুর খান। এটা আপনার হার্টের সমস্যা ও কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে সাহায্য করবে।
  • কাজের চাপে আপনার শরীর দুর্বল হয়ে আসলে। একটি বা দুটি খেজুর খাওয়া যেতে পারে। তাতে আপনি পুরো এনার্জি ফিরে পাবেন।
  • হুট করে যদি সুগার লো হয়ে শরীরে জটিলতা দেখা, দিলে চিনির বদলে আপনি খেজুর খেতে পারেন। কারণ গবেষণায় দেখা গেছে, যে খেজুর ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে। ফলে নিয়মিত চিনি খেলে সুগার বাড়ার যে ঝুঁকিটা থাকবে। সেটা খেজুর নিয়মিত খেলে থাকবে না। তবে ডাইবেটিসের সমস্যা থাকলে খেজুর খেতে পারবেন, কিন্তু সতর্কতার সাথে। দৈনিক একটা বা দুটির বেশি শুকনা খেজুর খাওয়া উচিত নয়।
  • আপনি দুধ ফুটানোর সময় দুটি করে খেজুর দিয়ে দিবেন। তারপর খালি পেটে একটি নির্দিষ্ট সময়ে এই দুধ খাবেন। আপনি এই স্বাস্থ্যকর খাবারটি টানা ১০ দিন খেলে, রক্তস্বল্পতা ও ঘুমের সমস্যা দূর হবে।
  • কেউ যদি জিমে ওয়ার্কআউট করে থাকে। তখন তার শরীর থেকে ঘামের সাথে সাথে প্রয়োজনীয় উপাদানগুলো বেরিয়ে যায়। তাই ওয়ার্ক আউটের সময়ে শরীর চাঙ্গা রাখতে সাহায্য করবে এই খেজুর। ওয়ার্কআউটের অন্তত ৩০ মিনিট থেকে ১ ঘন্টা আগে ২ থেকে ৪ খেজুর খাবেন। এতে আপনার কার্বোহাইড্রেট ধীরে ধীরে নিঃসৃত হবে। এর ফলে সহজেই ক্লান্তিবোধ হবে না। এছাড়াও পেট থেকে দূষিত পদার্থ বের হয়ে যেতে সাহায্য করবে।
  • আপনারা যারা ওজন হীনতার সমস্যায় ভুগছেন। তারা প্রতিদিন ৪ থেকে ৫ টি খেজুর খাবেন। খেজুরে থাকা শর্করা প্রোটিন এবং ভিটামিন, এগুলো ওজন বাড়াতে সাহায্য করবে। এছাড়াও খেজুর আর শসা একসাথে খেলে আরো উপকার পাবেন।

কোন খেজুরে উপকার বেশি

শুকনো খেজুরের মধ্য মরিয়ম খেজুর সবথেকে বেশি উপকারী, ও পুষ্টিগুণ সম্পন্ন। মরিয়ম খেজুরের নাম শুনেনি এরকম মানুষ খুব কমই রয়েছে। এ খেজুরের বিভিন্ন উপকারিতার কারণে সকল খেজুরের মধ্যেও এই খেজুরটি বেশ জনপ্রিয়। বিশেষ করে রমজান মাসে সারাদিন রোজা রাখার পর মানুষ মরিয়ম খেজুর খেয়ে থাকে। কারণ মরিয়ম খেজুরের পুষ্টিগুণ শরীরের ব্যাপক উপকারে আসে। তবে ইসলাম ধর্মে রমজান মাস বাদেও নিয়মিত খেজুর খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া রয়েছে। 

আমাদের (বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নিজে প্রতিদিন সাতটি খেজুর খাওয়ার কথা বলেছেন। কারণ এতে নানা রোগ বালাই, বিষাক্ত জিনিস, জাদু-টোনা থেকে মুক্তি মিলবে বলে জানিয়েছেন। এতে বুঝা যায় যে শারীরিক সুস্থ অর্জনের জন্য মরিয়ম খেজুরের ভূমিকা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। গবেষকদের মতে শুকনো খেজুরের মধ্য মরিয়ম খেজুর সবথেকে বেশি উপকারী ও পুষ্টি সম্পন্ন। 

খেজুর খেলে কি বীর্য ঘন হয়

নিয়মিত খেজুর খেলে অবশ্যই বীর্য ঘন হয়। তার জন্য নিয়মিত ৫ টা থেকে ৭ টা শুকনো খেজুর খেতে হবে। এছাড়াও যদি নিয়মিত দুধ আর খেজুর খেতে পারেন। তাহলে যৌন শক্তি বৃদ্ধি পাবে। এবং পাশাপাশি বীর্য ও শুক্রাণু বৃদ্ধি পাবে।

  • যে সব পুরুষের বীর্য পাতলা তাদের বীর্য ঘন করতে প্রতিদিন মাখন এর সাথে খেজুর খেতে হবে। অথবা মাখন ও খেজুরের হালুয়া তৈরি করে খেতে হবে।
  • ইসলাম ধর্মে খেজুরের গুরুত্বের কথা বর্ণনা করা হয়েছে। সাধারণত খেজুরকে রোগ শক্তির মহাঔষধি মনে করা হয়।
  • খেজুর দুর্বলতা কাটাতে বেশ সাহায্য করে থাকে। এবং সন্তান ডেলিভারির পরে মায়েদের অতিরিক্ত রক্তচাপ বন্ধ করতেও, খেজুর অনেক বড় ভূমিকা পালন করে।
  • ৭ - ৮ মাস সময় থেকে গর্ভবতী মায়েদের জন্য খেজুর একটি গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য। সাধারণত এই সময় গর্ভবতী মায়েদের শরীরে অনেক দুর্বলতা কাজ করে। আর এই খেজুর খেলে মায়েদের শরীরে এই দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করে।
  • খোরমা খেজুরের হালুয়া যৌন সমস্যার মোক্ষম একটি ওষুধ হিসেবে সর্বাধিক সমাদৃত।
  • খেজুরের মধ্য প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে। যা আমাদের শরীরের নার্ভাস সিস্টেমকে সচল রাখতে খুবই সাহায্য করে।
  • এছাড়াও গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে খেজুরের মধ্য প্রায় ৪০০ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম থাকে। যা মানুষের ট্রেক্ট হওয়ার ভয়াবহতাকে ৪০% কমিয়ে দিয়ে থাকে।

খেজুরের পুষ্টি উপাদান

খেজুর শক্তির একটি ভালো উৎসব। তার জন্য খেজুর খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শরীরের ক্লান্তি ভাব দূর হয়ে যায়। এতে আছে প্রচুর ভিটামিন বি, যা ভিটামিন বি৬, মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। সাধারণত খেজুরের পুষ্টির উপাদান সম্পর্কে বলা হয় যে, ৪ টি বা ৩০ গ্রাম পরিমাণ খেজুরে আছে। ৯০ ক্যালরি  ১ গ্রাম প্রোটিন ১৩ মিলিম গ্রাম ক্যালসিয়াম ২.৮ গ্রাম ফাইবার। এছাড়াও খেজুরে আরো অনেক ধরনের পুষ্টি উপাদান রয়েছে।

আরও পড়ুন: নামাজ আদায় করার সঠিক নিয়ম ৫ওয়াক্ত নামাজ কত রাকাত

দিনে কয়টা খেজুর খাওয়া উচিত

আমাদের মধ্যে অনেকেই জানে না যে দিনে কয়টি করে খেজুর খাওয়া উচিত। আমাদের মধ্যে খেজুর বেশি খাওয়া হয়ে থাকে, শুধুমাত্র রমজান মাসে। এই সময় কম বেশি সকলেই খেজুর খেয়ে থাকেন। কারণ খেজুরের প্রচুর পরিমাণ পুষ্টি থাকে। খেজুর এমন একটি জিনিস এটি মিষ্টি হলেও শরীরের মেদ বা ওজন কমাতে সাহায্য করে। এমনকি খেজুর শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে শরীরকে সুস্থ ও সতেজ রাখে। তবে খেজুর খাওয়াতেও সাবধান হতে হবে। সকালে বা বিকেলে কোন খাবারেই বেশি খাওয়া ভালো নয়। আপনি দিনে ৫ টি করে খেজুর খেতে পারেন। কারণ এতে প্রায় ২৭৭ ক্যালোরি থাকে। যেটা আপনার দেহের জন্য যথেষ্ট।

উপসংহার

প্রিয় পাঠক বন্ধুরা আশা করি পুরো আর্টিকেলটি আপনারা মনোযোগ সহকারে পড়েছেন। এই পোস্ট থেকে আপনি আশা করি পুরুষদের জন্য খেজুরের উপকারিতা ও সঠিক নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। এই আলোচনা থেকে আরও জানতে পেরেছেন যে, কোন খেজুরে উপকার বেশি, খেজুর খেলে কি বীর্য ঘন হয়, খেজুরের পুষ্টি উপাদান, ও দিনে কয়টা খেজুর খাওয়া উচিত, এগুলো বিষয়ে অবগত হয়েছেন। আজকের এই আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে, তাহলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন। আমাদের ওয়েবসাইটে এই ধরনের আরো সুন্দর সুন্দর ব্লক পোস্ট করা হয়। আপনাদের সবার সুস্থতা কামনা করে আজ এখানেই শেষ করছি। এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

শাকিল বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url